দেশের তথ্য ডেস্ক।।
জুলিয়াস কিভিমাকি, পেশায় একজন হ্যাকার তিনি। বাড়ি ফিনল্যান্ডে। গত সোমবার দেশটির একটি আদালত তাঁকে কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, থেরাপি নেওয়া ৩৩ হাজার মানুষের তথ্য হ্যাক করে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করেছিলেন জুলিয়াস।
অবাক করা ঘটনা হলো টানা ১১ বছর ধরে এমন অপরাধ ঘটিয়েছেন জুলিয়াস। আর যখন এই কাজ শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। জুলিয়াসকে ইউরোপের অন্যতম একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী ধরা হয়।
বিবিসি বলছে, জুলিয়াস ৩৩ হাজার মানুষকে ব্ল্যাকমেল করেছিলেন। তাঁরা সবাই হয় থেরাপি নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। থেরাপি নেওয়ার সময়কার তথ্য (সেশন নোট) হ্যাক করে তা নিয়ে এত মানুষকে ব্ল্যাকমেল করেন তিনি।
জুলিয়াসকে ইউরোপের কিশোর হ্যাকিং গ্যাংয়ের হোতা বিবেচনা করা হয়।
বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিনল্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ইউশিমার ডিস্ট্রিক্ট আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন জুলিয়াস। গত সোমবার আদালত তাঁকে ৬ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এর আগে ফ্রান্সে আটক হন জুলিয়াস। পরে তাঁকে ফিনল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়। গত বছরের অক্টোবরে সেখানেই তাঁর বিচার শুরু হয়।
ফিনল্যান্ডের বিচারব্যবস্থার পক্ষ থেকে এক বুলেটিনে জানানো হয়েছে, দেশটির ব্যক্তিগত সাইকোথেরাপি পরিষেবা ‘ভাস্তামো’ ২০১৮ সালের নভেম্বরে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিল। রোগীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালেই ২৬ বছর বয়সী হ্যাকার (জুলিয়াস) ওই পরিষেবার কাছ থেকে ৪ লাখ ইউরো দাবি করেন। তবে ফিনল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমের দাবি, এর পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার ইউরোর বেশি ছিল।
জুলিয়াস বলেছিলেন, এ অর্থ বিটকয়েনে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু ওই সাইকোথেরাপি কেন্দ্রটি অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর জুলিয়াস হাজারো ভুক্তভোগীকে ই–মেইল করেন। প্রত্যেকের কাছে ২০০ ইউরো করে চান তিনি। বিবিসি জানিয়েছে, এমন কর্মকাণ্ডের পর অন্তত একজন ভুক্তভোগী আত্মহত্যা করেছেন।
যদিও জুলিয়াস তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু ফিনল্যান্ডের বিচারব্যবস্থার বুলেটিনে বলা হয়েছে, আদালতে উপস্থাপন করা তথ্য–উপাত্তে জুলিয়াসের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।