Dhaka 3:41 am, Sunday, 17 August 2025

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, খুবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, যৌন হয়রানি ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার বিভাগের এক ছাত্রী যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে এই অভিযোগ করেন। সোমবার (১১ আগস্ট) অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) অফিস শেষে অভিযোগটি জমা দেওয়া হয়। রোববার অফিস খোলার পর আবেদনটি দেখে সেটি যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দেই।

 

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যে কোনো হয়রানি বন্ধে বর্তমান প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের জমা দেওয়া তিন পাতার অভিযোগে ওই ছাত্রী ধারাবাহিকভাবে তাকে হয়রানিরর বিভিন্ন বর্ণনা দেন। এর সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানো যৌনবার্তার স্ক্রিণশটও জমা দিয়েছেন।

 

অভিযোগের একটি অংশে শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘হঠাৎ তিনি একদিন কল দেন এবং তার সাথে দেখা করার অনুরোধ করেন। আমি নিরালা মোড়ে গেলে তিনি কিছু কথা বলার অনুরোধ করে গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন কথা বলার একপর্যায়ে গাড়ির ভেতরে (প্রকাশযোগ্য নয়) সরাসরি অনৈতিক সম্পর্ক দেন। আমি কথাগুলো শুনে আপত্তি করি এবং রেগে গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। তিনি তখন ড্রাইভ করা অবস্থায় আমার হাত চেপে ধরেন এবং বলেন ‘জেদ করো না; আমি যা চাই তাই আমার করে নিই। আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই।’ জোর করে তার হাত ছাড়ানোর পর আবার বলেন, ‘আমি কখনো এত দিন কারো পেছনে ঘুরিনি, কারো জন্য অপেক্ষা করিনি, তোমার জন্যই এত দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমি তোমার রেজাল্টও বাড়িয়ে দেব, তোমার রেজাল্ট ৩.৫০ হয়ে যাবে।’ এসব শোনার পরে আমি দ্রুত তার গাড়ি থেকে নেমে কোনো রকমে আত্মরক্ষা করি।’

 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. রুবেল আনসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর বাবার অনুরোধে আমি তার খোঁজ খবর নিতাম। যে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এমন কিছু তার সঙ্গে ঘটেনি। সম্পূর্ণ অভিযোগই মিথ্যা।’

খুবির যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তের জন্য ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাল (মঙ্গলবার) থেকেই কমিটি কাজ শুরু করবে।’

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের এস এস সি-২০২৫ জিপিএ- ৫ প্রাপ্ত কৃতি ল্যাবরেটরিয়ানদের সংবর্ধনা প্রদান

ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, খুবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

প্রকাশঃ 04:45:43 am, Tuesday, 12 August 2025

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, যৌন হয়রানি ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার বিভাগের এক ছাত্রী যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে এই অভিযোগ করেন। সোমবার (১১ আগস্ট) অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) অফিস শেষে অভিযোগটি জমা দেওয়া হয়। রোববার অফিস খোলার পর আবেদনটি দেখে সেটি যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দেই।

 

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যে কোনো হয়রানি বন্ধে বর্তমান প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের জমা দেওয়া তিন পাতার অভিযোগে ওই ছাত্রী ধারাবাহিকভাবে তাকে হয়রানিরর বিভিন্ন বর্ণনা দেন। এর সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে ওয়াটসঅ্যাপে পাঠানো যৌনবার্তার স্ক্রিণশটও জমা দিয়েছেন।

 

অভিযোগের একটি অংশে শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘হঠাৎ তিনি একদিন কল দেন এবং তার সাথে দেখা করার অনুরোধ করেন। আমি নিরালা মোড়ে গেলে তিনি কিছু কথা বলার অনুরোধ করে গাড়িতে উঠতে বলেন। তখন কথা বলার একপর্যায়ে গাড়ির ভেতরে (প্রকাশযোগ্য নয়) সরাসরি অনৈতিক সম্পর্ক দেন। আমি কথাগুলো শুনে আপত্তি করি এবং রেগে গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি। তিনি তখন ড্রাইভ করা অবস্থায় আমার হাত চেপে ধরেন এবং বলেন ‘জেদ করো না; আমি যা চাই তাই আমার করে নিই। আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই।’ জোর করে তার হাত ছাড়ানোর পর আবার বলেন, ‘আমি কখনো এত দিন কারো পেছনে ঘুরিনি, কারো জন্য অপেক্ষা করিনি, তোমার জন্যই এত দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমি তোমার রেজাল্টও বাড়িয়ে দেব, তোমার রেজাল্ট ৩.৫০ হয়ে যাবে।’ এসব শোনার পরে আমি দ্রুত তার গাড়ি থেকে নেমে কোনো রকমে আত্মরক্ষা করি।’

 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক ড. রুবেল আনসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর বাবার অনুরোধে আমি তার খোঁজ খবর নিতাম। যে ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এমন কিছু তার সঙ্গে ঘটেনি। সম্পূর্ণ অভিযোগই মিথ্যা।’

খুবির যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তের জন্য ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাল (মঙ্গলবার) থেকেই কমিটি কাজ শুরু করবে।’