Dhaka 7:29 pm, Monday, 18 August 2025

মেয়েদের শয়নকক্ষে সিসি ক্যামেরা, মনিটর শিক্ষকের কাছে: সেই ঘটনায় এলো নতুন তথ্য

যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে একটি কওমি মাদ্রাসার ছাত্রীদের শয়নকক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানোর ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর মাদ্রাসাটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।

জানা গেছে, পাঁচতলা বিশিষ্ট ওই মাদ্রাসার ছাত্রীদের ঘরে দুটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়, যার মনিটর ছিল এক শিক্ষকের কক্ষে। বিষয়টি ছাত্রীদের কাছ থেকে জানতে পেরে এক অভিভাবক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন।

এরপর ৯ এপ্রিল সরেজমিনে তদন্তে যান শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান, যশোরের নাভারণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান এবং শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম। নারী পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় মাদ্রাসার ১৬টি ক্যামেরা ও মনিটর জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা হয় ক্যামেরার মেমোরিকার্ডও।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান জানান, জব্দ করা ফুটেজে এক মাসের রেকর্ড রয়েছে। যাচাই-বাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার পর ১১ এপ্রিল শুক্রবার শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রায় ৩০ জন সদস্য অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন কওমি বোর্ডের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল করিম যশোরী ও মাওলানা নাসিরুদ্দিন।

সভায় মাদ্রাসাটির পরিচালক মাওলানা তরিকুল ইসলাম নিজের দায় স্বীকার করে লিখিতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।

কওমি বোর্ডের নেতারা সভায় জানান, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তারা বিব্রত। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যার মধ্যে সব ছাত্রীকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, দেশে মেয়েদের কোনো কওমি মাদ্রাসায় আর সিসি ক্যামেরা বসানো যাবে না।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনার হোতা গ্রেপ্তার, দেড় লাখ টাকা উদ্ধার

মেয়েদের শয়নকক্ষে সিসি ক্যামেরা, মনিটর শিক্ষকের কাছে: সেই ঘটনায় এলো নতুন তথ্য

প্রকাশঃ 05:36:10 am, Sunday, 13 April 2025

যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে একটি কওমি মাদ্রাসার ছাত্রীদের শয়নকক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানোর ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর মাদ্রাসাটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।

জানা গেছে, পাঁচতলা বিশিষ্ট ওই মাদ্রাসার ছাত্রীদের ঘরে দুটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়, যার মনিটর ছিল এক শিক্ষকের কক্ষে। বিষয়টি ছাত্রীদের কাছ থেকে জানতে পেরে এক অভিভাবক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন।

এরপর ৯ এপ্রিল সরেজমিনে তদন্তে যান শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান, যশোরের নাভারণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান এবং শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম। নারী পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় মাদ্রাসার ১৬টি ক্যামেরা ও মনিটর জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা হয় ক্যামেরার মেমোরিকার্ডও।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান জানান, জব্দ করা ফুটেজে এক মাসের রেকর্ড রয়েছে। যাচাই-বাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার পর ১১ এপ্রিল শুক্রবার শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রায় ৩০ জন সদস্য অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন কওমি বোর্ডের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল করিম যশোরী ও মাওলানা নাসিরুদ্দিন।

সভায় মাদ্রাসাটির পরিচালক মাওলানা তরিকুল ইসলাম নিজের দায় স্বীকার করে লিখিতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।

কওমি বোর্ডের নেতারা সভায় জানান, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তারা বিব্রত। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যার মধ্যে সব ছাত্রীকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, দেশে মেয়েদের কোনো কওমি মাদ্রাসায় আর সিসি ক্যামেরা বসানো যাবে না।