Dhaka 9:18 pm, Sunday, 17 August 2025

এবার মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে মোদির ভারত, জানা গেল কারণ

ইরানের অপরিশোধিত তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের বাণিজ্য ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক জগবিন্দার সিং ব্রার ও তার মালিকানাধীন চারটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ বিভাগের ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল অফিস (ওএফএসি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ওএফএসি জানায়, ব্রারের মালিকানাধীন প্রায় ৩০টি জাহাজের অনেকগুলো ইরানের তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর অংশ হিসেবে কাজ করছে। শ্যাডো ফ্লিট বলতে সাধারণত নিষেধাজ্ঞার অধীন দেশ—ইরান, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার—তেল পরিবহনে নিয়োজিত, জটিল মালিকানা ও গোপন কার্যক্রম চালানো নৌবহরকে বোঝায়।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় ব্রারের ভারতভিত্তিক দুটি কোম্পানি—গ্লোবাল ট্যাঙ্কার্স ও বি অ্যান্ড পি সলিউশনস এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রাইম ট্যাঙ্কার্স ও গ্লোরি ইন্টারন্যাশনাল—এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা ‘ম্যাক্সিমাম প্রেশার ক্যাম্পেইন’-এর আওতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে গত তিন মাসে পাঁচ ধাপে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওএফএসি জানায়, ব্রারের কোম্পানিগুলো ইরানের জাতীয় তেল সংস্থা (NIOC) ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য তেল পরিবহন করে। এই জাহাজগুলো ইরাক, ইরান, আমিরাত ও ওমান উপসাগর এলাকায় উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে—জাহাজ থেকে জাহাজে স্থানান্তরের মাধ্যমে—তেল পরিবহন করে। পরে তেলের উৎস গোপন করতে জাল নথি ব্যবহার করে অন্য দেশের তেল হিসেবে দেখানো হয়।

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, ব্রার ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি মিলিশিয়ার অর্থদাতা সাঈদ আল-জামালের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় করে এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তারা আরও জানিয়েছে, ইরানি তেল রপ্তানি নেটওয়ার্ক ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “ইরানি সরকার তাদের তেল বিক্রি ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের জন্য অসাধু শিপিং কোম্পানি ও দালালদের ওপর নির্ভর করছে। যুক্তরাষ্ট্র এই অবৈধ নেটওয়ার্ক ধ্বংসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এর আগেও ইরানি তেল পরিবহনের অভিযোগে বেশ কয়েকটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের অক্টোবরে গাব্বারো শিপ সার্ভিসেস ও একই বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার ‘আর্কটিক এলএনজি ২’ প্রকল্পে জড়িত তিন ভারতীয় শিপিং কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করা হয়।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের এস এস সি-২০২৫ জিপিএ- ৫ প্রাপ্ত কৃতি ল্যাবরেটরিয়ানদের সংবর্ধনা প্রদান

এবার মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে মোদির ভারত, জানা গেল কারণ

প্রকাশঃ 06:40:40 am, Saturday, 12 April 2025

ইরানের অপরিশোধিত তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের বাণিজ্য ও পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক জগবিন্দার সিং ব্রার ও তার মালিকানাধীন চারটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ বিভাগের ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল অফিস (ওএফএসি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ওএফএসি জানায়, ব্রারের মালিকানাধীন প্রায় ৩০টি জাহাজের অনেকগুলো ইরানের তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর অংশ হিসেবে কাজ করছে। শ্যাডো ফ্লিট বলতে সাধারণত নিষেধাজ্ঞার অধীন দেশ—ইরান, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার—তেল পরিবহনে নিয়োজিত, জটিল মালিকানা ও গোপন কার্যক্রম চালানো নৌবহরকে বোঝায়।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় ব্রারের ভারতভিত্তিক দুটি কোম্পানি—গ্লোবাল ট্যাঙ্কার্স ও বি অ্যান্ড পি সলিউশনস এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রাইম ট্যাঙ্কার্স ও গ্লোরি ইন্টারন্যাশনাল—এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা ‘ম্যাক্সিমাম প্রেশার ক্যাম্পেইন’-এর আওতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে গত তিন মাসে পাঁচ ধাপে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওএফএসি জানায়, ব্রারের কোম্পানিগুলো ইরানের জাতীয় তেল সংস্থা (NIOC) ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য তেল পরিবহন করে। এই জাহাজগুলো ইরাক, ইরান, আমিরাত ও ওমান উপসাগর এলাকায় উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে—জাহাজ থেকে জাহাজে স্থানান্তরের মাধ্যমে—তেল পরিবহন করে। পরে তেলের উৎস গোপন করতে জাল নথি ব্যবহার করে অন্য দেশের তেল হিসেবে দেখানো হয়।

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, ব্রার ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি মিলিশিয়ার অর্থদাতা সাঈদ আল-জামালের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় করে এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তারা আরও জানিয়েছে, ইরানি তেল রপ্তানি নেটওয়ার্ক ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “ইরানি সরকার তাদের তেল বিক্রি ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের জন্য অসাধু শিপিং কোম্পানি ও দালালদের ওপর নির্ভর করছে। যুক্তরাষ্ট্র এই অবৈধ নেটওয়ার্ক ধ্বংসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এর আগেও ইরানি তেল পরিবহনের অভিযোগে বেশ কয়েকটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের অক্টোবরে গাব্বারো শিপ সার্ভিসেস ও একই বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার ‘আর্কটিক এলএনজি ২’ প্রকল্পে জড়িত তিন ভারতীয় শিপিং কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করা হয়।