Dhaka 5:18 am, Monday, 18 August 2025

‘সাকিবের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতেই হবে’

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা অলরাউন্ডার ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিএনপির ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক। সম্প্রতি এক রাজনৈতিক সভায় তিনি বলেন, ‘সাকিব গত ১৭ বছরের স্বৈরাচার সরকারের একজন এমপি হিসেবে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। নিজের সুবিধার জন্য তিনি অবৈধ সংসদে যোগ দিয়েছেন।’

আমিনুল হকের এমন মন্তব্য ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের দায়িত্ব দেশের প্রতি নিষ্ঠা বজায় রাখা। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা থাকা উচিত। কিন্তু সাকিব তার ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে আপস করেছেন, যার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সাকিব আল হাসান দেশে ফেরেননি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছেন। এ প্রসঙ্গে আমিনুল বলেন, ‘এ ধরনের একজন খেলোয়াড়কে দেশে ফিরতে দেওয়া হবে কি না, সেটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।  তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে—স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে বিচার হবে, ইনশাআল্লাহ।’

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। তবে তার রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে ক্রীড়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু থেকেই আলোচনা-সমালোচনা চলছিল।

সাকিবকে নিয়ে আমিনুল হকের এমন বক্তব্যের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সাকিবের ঘনিষ্ঠ কোনো মহল বা নিজে সাকিব কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে আওয়ামী লীগপন্থী অনেক নেতাকর্মী সামাজিক মাধ্যমে এই মন্তব্যের কড়া নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘একজন জাতীয় গৌরবের খেলোয়াড়কে এভাবে হেয় করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাকিবের মতো আন্তর্জাতিক তারকার রাজনীতিতে সরাসরি অংশগ্রহণ দেশের ক্রীড়া ও রাজনীতির সীমারেখা নিয়ে নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ এই অবস্থানকে ‘হীন রাজনৈতিক কৌশল’ হিসেবে দেখলেও, আবার অনেকেই মনে করছেন, সাকিবের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক প্রয়োজন।

এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্রীড়া ও রাজনীতির দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক যে আরও ঘনীভূত হচ্ছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

 

 

 

 

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের এস এস সি-২০২৫ জিপিএ- ৫ প্রাপ্ত কৃতি ল্যাবরেটরিয়ানদের সংবর্ধনা প্রদান

‘সাকিবের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতেই হবে’

প্রকাশঃ 10:31:44 am, Saturday, 12 April 2025

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা অলরাউন্ডার ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিএনপির ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক। সম্প্রতি এক রাজনৈতিক সভায় তিনি বলেন, ‘সাকিব গত ১৭ বছরের স্বৈরাচার সরকারের একজন এমপি হিসেবে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। নিজের সুবিধার জন্য তিনি অবৈধ সংসদে যোগ দিয়েছেন।’

আমিনুল হকের এমন মন্তব্য ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের দায়িত্ব দেশের প্রতি নিষ্ঠা বজায় রাখা। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা থাকা উচিত। কিন্তু সাকিব তার ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে আপস করেছেন, যার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সাকিব আল হাসান দেশে ফেরেননি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছেন। এ প্রসঙ্গে আমিনুল বলেন, ‘এ ধরনের একজন খেলোয়াড়কে দেশে ফিরতে দেওয়া হবে কি না, সেটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।  তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে—স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে বিচার হবে, ইনশাআল্লাহ।’

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। তবে তার রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে ক্রীড়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু থেকেই আলোচনা-সমালোচনা চলছিল।

সাকিবকে নিয়ে আমিনুল হকের এমন বক্তব্যের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সাকিবের ঘনিষ্ঠ কোনো মহল বা নিজে সাকিব কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে আওয়ামী লীগপন্থী অনেক নেতাকর্মী সামাজিক মাধ্যমে এই মন্তব্যের কড়া নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘একজন জাতীয় গৌরবের খেলোয়াড়কে এভাবে হেয় করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাকিবের মতো আন্তর্জাতিক তারকার রাজনীতিতে সরাসরি অংশগ্রহণ দেশের ক্রীড়া ও রাজনীতির সীমারেখা নিয়ে নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ এই অবস্থানকে ‘হীন রাজনৈতিক কৌশল’ হিসেবে দেখলেও, আবার অনেকেই মনে করছেন, সাকিবের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক প্রয়োজন।

এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্রীড়া ও রাজনীতির দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক যে আরও ঘনীভূত হচ্ছে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।