নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসুরহাট সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল ইনজেকশনের কারণে এক প্রবাসী যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল বন্ধ ও দায়ী চিকিৎসকের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন নিহতের স্বজনেরা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে নিহত শাহরিয়ার মাহমুদ আবিরের স্বজনেরা উপজেলার বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং দায়ী চিকিৎসকের গ্রেপ্তার ও হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানান।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আবিরকে বসুরহাট সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবিরের ছোট ভাই ইমতিয়াজ মাহমুদ ইমন জানান, আবির সম্প্রতি আবুধাবি থেকে দেশে ফেরেন। হালকা ডায়রিয়া ও জ্বর দেখা দিলে পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ডিউটি চিকিৎসক বেলায়েত হোসেন মাহমুদ একটি ইনজেকশন পুশ করার পরপরই আবিরের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চোখ, মুখ লাল হয়ে যায় এবং প্রেশার একদম কমে যায়। পরে তাকে ফেনী ও ঢাকার বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হলে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ইমন জানান, ভুল ইনজেকশন দেওয়ার কারণেই আবিরের মৃত্যু হয়েছে। তিনি দোষী চিকিৎসকের শাস্তি এবং হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুরহাট সেন্ট্রাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নোয়াখালী মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম আব্দুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রোগী ভর্তির সময় থেকেই তার প্রেশার ছিল অত্যন্ত নিচে এবং শারীরিক অবস্থা ছিল জটিল। তিনি বলেন, “আমাদের ডিউটি চিকিৎসক যথাযথভাবে চিকিৎসা দিয়েছেন। রোগীর স্বজনেরা ঘটনার পর রেফার করার অনুরোধে তাকে ফেনী পাঠানো হয়।”
এদিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, “নিহতের স্বজনেরা প্রথমে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করলেও, পরে তারা আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।”
প্রবাসী যুবক শাহরিয়ার মাহমুদ আবির (২৮) বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সানাউল্যাহ বাহারের ছেলে। তিনি গত পাঁচ বছর ধরে আবুধাবিতে ব্যবসা করছিলেন এবং প্রতি বছর দেশে আসতেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।