Dhaka 1:29 am, Wednesday, 7 May 2025

গাজায় অভিযানে আপত্তি সেনাদের, ৯৭০ সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি ইসরায়েলের

গাজায় চলমান সামরিক অভিযানে আপত্তি জানানোয় নিজেদের বিমান বাহিনীর ৯৭০ জন পাইলট, কর্মকর্তা ও সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। এদের মধ্যে নিয়মিত সদস্য ছাড়াও রয়েছেন রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যরা।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার বরাবর গাজায় সামরিক অভিযানে আপত্তি এবং এ অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি চিঠি গিয়েছে এবং তাতে এই ৯৭০ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। এই স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে নিয়মিত স্টাফদের পাশাপাশি রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যরাও আছেন।

সূত্রের বরাতে হারেৎজ জানায়, চিঠি পাওয়ার পরই ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র তারাই বাহিনীতে থাকতে পারবেন যারা স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে রাজি হবেন। তবে এই হুমকি খুব একটা সফল হয়নি, কারণ এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ জন সদস্য স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছেন।

স্বাক্ষরকারী সদস্যদের অভিযোগ, গাজায় চলমান অভিযান মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের দাবি, এই অভিযানের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রকৃত নিরাপত্তার কোনও সম্পর্ক নেই।

একই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। তাদের ভাষ্য, গাজা আগ্রাসনের মূল উদ্দেশ্য নিরাপত্তা নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা।

এদিকে সমালোচনার জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল তোমের বার। তিনি বলেন, “এটি কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয় বরং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। যারা স্বাক্ষর করেছেন, তারা ভবিষ্যতে দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করবেন কি না, তা নিয়ে বাহিনী সন্দিহান। এমন অবস্থায় জিম্মিদের উদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ চলাকালীন এমন চিঠি ‘বৈধ নয়’, তবে আশ্বাস দেন যে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে নেতানিয়াহু সরকার।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন।

অন্যদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৬২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার মানুষকে মৃত ধরে নিয়েই এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় অভিযানে আপত্তি সেনাদের, ৯৭০ সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি ইসরায়েলের

প্রকাশঃ 09:32:48 am, Thursday, 10 April 2025

গাজায় চলমান সামরিক অভিযানে আপত্তি জানানোয় নিজেদের বিমান বাহিনীর ৯৭০ জন পাইলট, কর্মকর্তা ও সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। এদের মধ্যে নিয়মিত সদস্য ছাড়াও রয়েছেন রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যরা।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার বরাবর গাজায় সামরিক অভিযানে আপত্তি এবং এ অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি চিঠি গিয়েছে এবং তাতে এই ৯৭০ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। এই স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে নিয়মিত স্টাফদের পাশাপাশি রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যরাও আছেন।

সূত্রের বরাতে হারেৎজ জানায়, চিঠি পাওয়ার পরই ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র তারাই বাহিনীতে থাকতে পারবেন যারা স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে রাজি হবেন। তবে এই হুমকি খুব একটা সফল হয়নি, কারণ এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ জন সদস্য স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছেন।

স্বাক্ষরকারী সদস্যদের অভিযোগ, গাজায় চলমান অভিযান মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের দাবি, এই অভিযানের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রকৃত নিরাপত্তার কোনও সম্পর্ক নেই।

একই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। তাদের ভাষ্য, গাজা আগ্রাসনের মূল উদ্দেশ্য নিরাপত্তা নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা।

এদিকে সমালোচনার জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল তোমের বার। তিনি বলেন, “এটি কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয় বরং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। যারা স্বাক্ষর করেছেন, তারা ভবিষ্যতে দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করবেন কি না, তা নিয়ে বাহিনী সন্দিহান। এমন অবস্থায় জিম্মিদের উদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ চলাকালীন এমন চিঠি ‘বৈধ নয়’, তবে আশ্বাস দেন যে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে নেতানিয়াহু সরকার।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন।

অন্যদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৬২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার মানুষকে মৃত ধরে নিয়েই এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।