আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, “গত ২৭ মার্চ উত্তরায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়, যেখানে তুরিন আফরোজ এজাহারভুক্ত আসামি। আমরা তার গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছিলাম। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে নীলফামারিতেও মামলা রয়েছে।”
এদিকে তুরিন আফরোজের মা সামসুন নাহার তাসলিম মেয়ের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “তুরিনের অনৈতিক ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে সে আমাকে নির্যাতন করত। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে আমার উত্তরার বাসা থেকে বের করে দেয়। এখন নতুন সরকার এসেছে, আমি ড. ইউনূসের সরকারের কাছে আমার বাসা ফেরত চাই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “জামায়াতের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক না থাকলেও তুরিন আমাকে জামায়াতের রুকন বলে অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি থানায় জিডি করতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি। ২০২৩ সালে সংবাদ সম্মেলন করার পর তুরিনের হাতে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হই।”
সাবেক এই প্রসিকিউটর ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমসহ একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার প্রসিকিউশন টিমে যুক্ত ছিলেন।
তবে ২০১৯ সালে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সাবেক এনএসআই ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এর জেরে ১১ নভেম্বর তাকে প্রসিকিউটরের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সেই ধারাবাহিকতায় আট মাস পর গ্রেপ্তার হলেন তুরিন আফরোজ।