Dhaka 2:37 pm, Sunday, 17 August 2025

পাকিস্তান সীমান্তে দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি

জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়েছে ভারতীয় বাহিনী। এ সময় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন স্থানীয়রা।

জম্মু অঞ্চলের কাঠুয়া জেলার ঘন জঙ্গলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীদের একটি দলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয় গতকাল।

এই অঞ্চলে দুষ্কৃতিকারীদের উপস্থিতি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করা হয়। একটি তথ্যে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২২ মার্চ) পাঁচ থেকে ছয়জন সন্ত্রাসীর দুটি দল অনুপ্রবেশ করেছিল ভারতে।
খবর পেয়ে স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপের একটি পুলিশ দল তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তখন সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর ব্যাপক গুলি চালায়, যার ফলে আধ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তীব্র বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়।

সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে সহায়তা করার জন্য দ্রুত অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়।
ধারণা করা হচ্ছিল, সন্ত্রাসীরা শনিবার গিরিখাত পথ দিয়ে অথবা নতুন তৈরি সুড়ঙ্গ দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল। প্রাথমিক গুলিবর্ষণে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সারা রাত ধরে এলাকাটি কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখা হয়েছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো যোগাযোগ হয়নি।
কাঠ সংগ্রহকারী কিছু গ্রামের নারী জানিয়েছেন, তারা প্রায় পাঁচজন সন্ত্রাসীকে একটি বিশাল নার্সারি এলাকায় আশ্রয় নিতে দেখেছেন। অনিতা দেবী (৪৮) নামে এক গ্রামবাসী জানান, ভারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে কাঠ সংগ্রহ করতে জঙ্গলে যাওয়ার সময় ধরে ফেলে।

তিনি পিটিআইকে বলে, ‘সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে বন্দুকের দেখিয়ে ধরে ফেলে এবং আমাকে কাছে আসতে বলে। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে পালানোর ইঙ্গিত দিলে আমি দৌড়াতে শুরু করি।

সন্ত্রাসীদের একজন আমাকে থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে কিন্তু আমি চিৎকার করতে শুরু করি। এতে ঘাস কাটতে থাকা আরো দুইজন ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করে।’
তিনি বলেন, রবিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিটের দিকে ঘটনাটি ঘটে এবং তারা সকলেই বাড়ি ফিরে পুলিশকে খবর দেয়। তারা সংখ্যায় পাঁচজন ছিল।

জেলা উন্নয়ন কাউন্সিলর করণ কুমার আরো বলেন, এলাকায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। আমরা প্রায় ২৫০ রাউন্ড তীব্র গুলির শব্দ শুনেছি। সন্ত্রাসীদের তাড়াতে নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।’

আজ সোমবার (২৪ মার্চ) দ্বিতীয় দিনে প্রবেশ করেছে সেই অভিযান। এদিকে পুলিশ মহাপরিচালক নলিন প্রভাতের নেতৃত্বে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। আজ সকালে অতিরিক্ত কমান্ডো, ড্রোন এবং স্নিফার কুকুর মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে যেখানে সন্ত্রাসীরা সীমান্তের ওপার থেকে অনুপ্রবেশের পর লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের এস এস সি-২০২৫ জিপিএ- ৫ প্রাপ্ত কৃতি ল্যাবরেটরিয়ানদের সংবর্ধনা প্রদান

পাকিস্তান সীমান্তে দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি

প্রকাশঃ 08:02:09 am, Monday, 24 March 2025

জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়েছে ভারতীয় বাহিনী। এ সময় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন স্থানীয়রা।

জম্মু অঞ্চলের কাঠুয়া জেলার ঘন জঙ্গলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীদের একটি দলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয় গতকাল।

এই অঞ্চলে দুষ্কৃতিকারীদের উপস্থিতি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করা হয়। একটি তথ্যে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২২ মার্চ) পাঁচ থেকে ছয়জন সন্ত্রাসীর দুটি দল অনুপ্রবেশ করেছিল ভারতে।
খবর পেয়ে স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপের একটি পুলিশ দল তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তখন সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর ব্যাপক গুলি চালায়, যার ফলে আধ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তীব্র বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়।

সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে সহায়তা করার জন্য দ্রুত অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়।
ধারণা করা হচ্ছিল, সন্ত্রাসীরা শনিবার গিরিখাত পথ দিয়ে অথবা নতুন তৈরি সুড়ঙ্গ দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল। প্রাথমিক গুলিবর্ষণে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সারা রাত ধরে এলাকাটি কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখা হয়েছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো যোগাযোগ হয়নি।
কাঠ সংগ্রহকারী কিছু গ্রামের নারী জানিয়েছেন, তারা প্রায় পাঁচজন সন্ত্রাসীকে একটি বিশাল নার্সারি এলাকায় আশ্রয় নিতে দেখেছেন। অনিতা দেবী (৪৮) নামে এক গ্রামবাসী জানান, ভারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে কাঠ সংগ্রহ করতে জঙ্গলে যাওয়ার সময় ধরে ফেলে।

তিনি পিটিআইকে বলে, ‘সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে বন্দুকের দেখিয়ে ধরে ফেলে এবং আমাকে কাছে আসতে বলে। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে পালানোর ইঙ্গিত দিলে আমি দৌড়াতে শুরু করি।

সন্ত্রাসীদের একজন আমাকে থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে কিন্তু আমি চিৎকার করতে শুরু করি। এতে ঘাস কাটতে থাকা আরো দুইজন ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করে।’
তিনি বলেন, রবিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিটের দিকে ঘটনাটি ঘটে এবং তারা সকলেই বাড়ি ফিরে পুলিশকে খবর দেয়। তারা সংখ্যায় পাঁচজন ছিল।

জেলা উন্নয়ন কাউন্সিলর করণ কুমার আরো বলেন, এলাকায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। আমরা প্রায় ২৫০ রাউন্ড তীব্র গুলির শব্দ শুনেছি। সন্ত্রাসীদের তাড়াতে নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।’

আজ সোমবার (২৪ মার্চ) দ্বিতীয় দিনে প্রবেশ করেছে সেই অভিযান। এদিকে পুলিশ মহাপরিচালক নলিন প্রভাতের নেতৃত্বে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। আজ সকালে অতিরিক্ত কমান্ডো, ড্রোন এবং স্নিফার কুকুর মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে যেখানে সন্ত্রাসীরা সীমান্তের ওপার থেকে অনুপ্রবেশের পর লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে