Dhaka 9:44 pm, Monday, 18 August 2025

খুলনায় কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনার হোতা গ্রেপ্তার, দেড় লাখ টাকা উদ্ধার

 

খুলনার রূপসায় কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা লুটের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার একমাত্র হোতা ইউনূস শেখকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার কাছ থেকে চুরির দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) মধ্যরাতে তাকে রূপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার (১৮ আগস্ট) আসামিকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ।

এদিকে, ব্যাংক লুটের ঘটনায় কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গতকাল রবিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- কৃষি ব্যাংকের খুলনা বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ। কৃষি ব্যাংক খুলনার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত ইউনূস রূপসা উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের ইনছান শেখের ছেলে। তিনি কৃষি ব্যাংক ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। একই ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে।

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘এ’ সার্কেল মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ইউনূসকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি দল ইতোমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। এখন পর্যন্ত লুট হওয়া সব টাকা উদ্ধার করা যায়নি। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ভোর রাতে ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তেমন কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রূপসা থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, কৃষি ব্যাংক পূর্ব রূপসা ঘাট শাখার ছয়টি তালাসহ ভল্ট ভেঙ্গে ১৬ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আরো তথ্য জানা এবং লুট হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, ইউনূস ঋণগ্রস্ত ছিলেন। চুরি করা টাকা থেকে কিছু ঋণ পরিশোধ করেছেন। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এই চুরির ঘটনাটি ইউনূস একাই ঘটিয়েছে। আজ তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে।

গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে ব্যাংক নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙ্গা। নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কশেম বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। এ ঘটনায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রূপসা থানায় মামলা করেন। মামলা নং ১৭।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় লাজ ফার্মাকে নকল ওষুধ বিক্রির দায়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা

খুলনায় কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনার হোতা গ্রেপ্তার, দেড় লাখ টাকা উদ্ধার

প্রকাশঃ 01:26:21 pm, Monday, 18 August 2025

 

খুলনার রূপসায় কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা লুটের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার একমাত্র হোতা ইউনূস শেখকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার কাছ থেকে চুরির দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) মধ্যরাতে তাকে রূপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার (১৮ আগস্ট) আসামিকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ।

এদিকে, ব্যাংক লুটের ঘটনায় কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গতকাল রবিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- কৃষি ব্যাংকের খুলনা বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ। কৃষি ব্যাংক খুলনার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত ইউনূস রূপসা উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের ইনছান শেখের ছেলে। তিনি কৃষি ব্যাংক ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। একই ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে।

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘এ’ সার্কেল মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ইউনূসকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি দল ইতোমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। এখন পর্যন্ত লুট হওয়া সব টাকা উদ্ধার করা যায়নি। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ভোর রাতে ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তেমন কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রূপসা থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, কৃষি ব্যাংক পূর্ব রূপসা ঘাট শাখার ছয়টি তালাসহ ভল্ট ভেঙ্গে ১৬ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আরো তথ্য জানা এবং লুট হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, ইউনূস ঋণগ্রস্ত ছিলেন। চুরি করা টাকা থেকে কিছু ঋণ পরিশোধ করেছেন। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এই চুরির ঘটনাটি ইউনূস একাই ঘটিয়েছে। আজ তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে।

গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে ব্যাংক নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙ্গা। নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কশেম বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। এ ঘটনায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রূপসা থানায় মামলা করেন। মামলা নং ১৭।