দুদিনেও (১৫ মার্চ) প্রজ্ঞাপনে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মাছ, মাংশ, ডিম, ডাল, সবজিসহ ২৯ টি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও খুলনার পাইকারি বাজারগুলোতে এর কোন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। রবিবার (১৭ মার্চ )খুলনার কয়েকটি পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায় সরকারের বেঁধে দেওয়া ২৯ টি পণ্যের অধিকাংশ পণ্য অধিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
খুলনার নিউমার্কেট, দৌলতপুর এবং ফুলবাড়ি গেট খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। সরকারের নির্ধারিত মূল্য ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা। সোনালি মুরগী কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। সরকারের নির্ধারিত মূল্য ২৬২ টাকা। গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭০০ থেকে ৭২৫ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা। নিউমার্কেট পাইকারি বাজারে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। অথচ দৌলতপুর বাজারের কিছু দোকানে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও কয়েকটি দোকানে পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
দৌলতপুর বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা বিশ্বনাথ সাধু বলেন, আজ আমরা কম দামে কিনেছি তাই কম দামে বিক্রি করছি। যাদের বেশি দামে কেনা তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। আগামীকাল দাম বাড়তেও পারে, কমতেও পারে। দাম নির্ভর করে মালের আমদানীর উপর। সরকার নির্ধারিত দেশি পেঁয়াজের মূল্য কেজি প্রতি ৬৫ টাকা ৪০ পয়সা। রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা থেকে ১৩০ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ১২০ টাকা ৮১ পয়সা। ছোলা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১০৫ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা। শুকনা মরিচ কেজি প্রতি ৪৪০ টাকা থেকে ৪৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে । সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩২৭ টাকা ৩৪ পয়সা। মোটা মসুর ডাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা।
সরকার নির্ধারিত মূল্য ১০৫ টাকা। খেজুর সর্বনিম্ন কেজি প্রতি ২০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্য সর্বনিম্ন খুচরা মানের খেজুর ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা আর জাইদী খেজুর ১৮৫ টাকা ০৭ পয়সা।
দৌলতপুর বাজারের খেজুর বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী জানান, জায়দী খেজুর কেজি প্রতি আমাদেরকে ২৭৫ টাকা দরে কিনতে হয় তাহলে আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮৫ টাকায় কিভাবে বিক্রি করবো? নিউ মার্কেট খুচরা বাজারে এক হালি সাগরকলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ২৯ টাকা ৭৮ পয়সা। আলু কেজি প্রতি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্য ২৮ টাকা ৫৫ পয়সা। আমদানিকৃত আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২২০ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮০ টাকা ২০ পয়সা। কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। সরকার নির্ধারিত মূল্য ৬০ টাকা ২০ পয়সা।
সরকারের নির্ধারিত মূল্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নিউমার্কেট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রুস্তম আলী বলেন, কাঁচা মাল নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় চলে না। আমদানি বেশি হবে দাম কমে যাবে, আর আমদানি কমে যাবে দাম বেশি হবে। একই বাজারের মাংশ ব্যবসায়ী মোঃ রানা বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্য সম্পর্কে আমরা জানিনা। খুলনা সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাদেরকে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ৭২৫ টাকা কেজি। সেই হিসেবে আমরা বিক্রি করছি।
একই বাজারের খুচরা খেজুর বিক্রেতা জাফর বলেন, বাংলা খেজুর সর্বনিম্ন ১৭০ টাকা কেজি দরে আমরা কিনি। এরপর খরচ আছে। ময়লা এবং নষ্ট খেজুর ফেলে দিতে হয়। কেজি প্রতি ২০০ টাকার নীচে বিক্রি করলে আমাদের চালান বাঁচে না।
দৌলতপুর বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী মোঃ শিমুল শেখ বলেন, ব্রয়লার মুরগী কেজি প্রতি ১৮৫ টাকা এবং সোনালি মুরগী কেজি প্রতি ২৭৫ টাকা দরে আমাদেরকে ক্রয় করতে হয়। তাহলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আমরা কিভাবে বিক্রি করবো? সরকার আমাদেরকে ভর্তুকি দিলে সে ক্ষেত্রে বিক্রি করা যায়।
দেশের তথ্য / জে আর