দেশের তথ্য ডেস্ক।। ১০ মার্চ রবিবার সকাল ১০:০৫ এ বয়রাস্থ পুলিশ লাইনস মাল্টিপারপাস হলে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয়ের সভাপতিত্বে গ্রান্ড কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রান্ড কল্যাণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও শ্রীমদ্ভগবদগীতা থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে আয়োজিত সভার কার্যক্রম শুরু হয়। সভার শুরুতে “ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে” স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ খুলনা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের জনাব ডা: মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মাসুম প্রদান করেন। এরপর বিগত কল্যাণ সভায় প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অত:পর কেএমপি’র আড়ংঘাটা থানায় কর্মরত এসআই(নিঃ) শেখ শওকত আলী; প্রসিকিউশন বিভাগে কর্মরত এসআই(নিঃ) ফনী ভূষণ সরকার ও পরিচ্ছন্নকর্মী রনজিৎ দীর্ঘ চাকুরী জীবন শেষে বার্ধ্যক্যজনিত অবসর এবং আড়াংঘাটা পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত কনস্টেবল মোঃ আকরার আলী মোল্লা; প্রসিকিউশন বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল মোঃ রোস্তম আলী দীর্ঘ চাকুরী জীবন শেষে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ায় পুলিশ কমিশনার মহোদয় তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা, ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করেন। একইসাথে তাদের অবসরকালীন সময়ে সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা এবং তারা যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় কল্যাণ সভার প্রারম্ভে বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত সকল পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সদের বিভিন্ন সমস্যার কথা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেন। পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবী এবং প্রত্যাশা পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয় গ্রান্ড কল্যাণ সভায় উপস্থিত অফিসার ও ফোর্সদের বক্তব্য শ্রবণ শেষে উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, “গত ০৭ জানুয়ারি উৎসব মুখর পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন প্রতিটি পুলিশ সদস্য ধৈর্য্য, সহনশীলতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রথম পুলিশ সমাবেশে বলেছিলেন “তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ, তোমরা ইংরেজদের পুলিশ নও, তোমরা পাকিস্তানের শোষকদের পুলিশ নও, তোমরা জনগণের পুলিশ, তোমাদের কর্তব্য, জনগণের সেবা করা।” সুতারাং আমাদের এখন সময় এসেছে মানুষের প্রতি পুলিশের যে বিমাতাসুলভ আচরণ সেখান থেকে বের হয়ে এসে সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করা। বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। আমাদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ডিসিপ্লিন মেইন্টেন করা। সেজন্য কেএমপির সকল পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার ও ফোর্সকে অবশ্যই ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। যে কোন প্রকার মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স এবং পুলিশের কোন সদস্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ও পারিপার্শ্বিক কোনো ভাবে মাদক, অনলাইন জুয়া বা প্রকাশ্য জুয়ার সাথে জড়িয়ে না যায় সে ব্যাপারে সকলকে সর্তক থাকতে হবে এবং কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্য যারা রাষ্ট্রীয় পদক বিপিএম, পিপিএম এবং আইজি ব্যাজ লাভ করেছেন সকলকে পুলিশ কমিশনার মহোদয় ধন্যবাদ জানিয়ে কেএমপি পরিবারের এই ভালো কাজের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার আহবান জানান। এছাড়াও তিনি সরকারি যানবহন যথাযথ ব্যবহার করাসহ ডিউটি শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি ক্লথিং স্টোর, রেশন স্টোর ও অস্ত্রাগার এর ইনচার্জদের কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স, থানা ফাঁড়ি, ক্যাম্পের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন। সবশেষে পুলিশ কমিশনার মহোদয় তার বক্তব্যে হ্যালো কেএমপি অ্যাপস্ ব্যবহারের জন্য প্রচার-প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেন। তিনি আগামীতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আভিযানিক সাফল্যে এবং সর্বপরি ডিসিপ্লিনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কেএমপিকে একটি জনবান্ধব বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করার করার এবং চলমান অভিযান অব্যাহত রাখা আশাবাদ ব্যক্ত করে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
উক্ত গ্রান্ড কল্যাণ সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল অতিঃ দায়িত্বে ক্রাইম) জনাব মোছাঃ তাসলিমা খাতুন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব এম.এম শাকিলুজ্জামান; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জনাব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি) জনাব শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব মনিরা সুলতানা এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (আরসিডি) জনাব শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী-সহ অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, সহকারী পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, অফিসার ইনচার্জবৃন্দ ও ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।