দেশের তথ্য ডেস্ক।। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শৃঙ্খলা রক্ষায় সংসদ নির্বাচনের চেয়েও বেশি এফোর্ট দেবে। এতে আরো ভালো ভোটের আশা দেখছে সংস্থাটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো একটি জেলায় একাধিক ধাপে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন। ফলে অধিক হারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের জন্য অন্য জেলার দ্বারস্থ হতে হবে না। এতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা যাবে। মূলত, ভোটে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলেও যেন সহজে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায়, তাই এই কৌশল নিয়েছে সংস্থাটি।
অতীতে বিভাগ অনুযায়ী জেলাভিত্তিক উপজেলাগুলোর নির্বাচন হয়েছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অন্য এলাকা থেকে নিয়োগ করা হতো। এবারও কয়েক ধাপে ভোট হলেও একই এলাকাকে একাধিক ধাপে বিন্যাস করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচন ধাপে ধাপে হবে বিধায় শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা বেশি শক্তি নিয়োগ করার সুযোগ পাবো।
তিনি বলেন, চারটি ধাপে নির্বাচন হওয়াতে কমিশন মনে করছে যে এতে সুবিধা আছে। এছাড়া একই জেলার মধ্যে একাধিক ধাপে নির্বাচন দেওয়ায় একই জেলার পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন দিয়ে কাজটা করা অনেক সহজ হবে। আগে যেভাবে নির্বাচন করা হয়েছে, এক অঞ্চলে নির্বাচনের জন্য অন্য অঞ্চলের থেকে পুলিশ আনতে হতো। সেক্ষেত্রে পুলিশের যাতায়াত বা অন্যান্য প্রশাসনে যারা দায়িত্ব পালন করে তাদের যাতায়াত ও থাকার একটা অসুবিধা হয়। আর আমরা যদি একই জেলার মধ্যে ধাপে ধাপে নির্বাচন করি, তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলার যে প্রশাসনিক ক্ষমতা আছে সে সংখ্যা দিয়েই আমরা ওই জেলার নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারে। এজন্যই কমিশন মনে করছে যে ধাপে ধাপে একই জেলার ভেতরে নির্বাচন হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মুভমেন্টে বিশেষ সুবিধা পাবে। এতে নির্বাচনী ব্যয়ও কিছুটা কমতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর বলেন, সংসদ নির্বাচন যেভাবে করেছি উপজেলা নির্বাচন তার চেয়ে ভালো ভাবে করব। কারণ জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে ৩০০ জায়গায় এফোর্ট দিতে হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন চার ধাপে করব। প্রতি ধাপে একশ’র মতো উপজেলায় নির্বাচন হবে। এতে আশাকরি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, জেলা পর্যায়েও একাধিক ধাপে ভোট করার পরিকল্পনা এবারই প্রথম। আমার সহকর্মীরা চমৎকার একটি কৌশল বের করেছেন। আশাকরি, এতে ইতিবাচক ফলাফল আসবে।
চার ধাপে নির্বাচন, ৪ মে থেকে শুরু : আগামী ৪ মে থেকে চার ধাপে দেশের ৭৯৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৫৩টি, দ্বিতীয় ধাপে ১৬৫টি, তৃতীয় ধাপে ১১১টি এবং চতুর্থ ধাপে ৫২টি উপজেলার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে। অবশিষ্ট ১২টি উপজেলা পরিষদে পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি জানিয়েছে, প্রথম ধাপে আগামী ৪ মে ১৫৩টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে ও চতুর্থ ধাপে ২৫ মে মোট ৩২৮টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাকি ১২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের তারিখ পরবর্তীতে জানাবে কমিশন।
এর আগে গত ১৫ ফেব্র“য়ারি চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিলা অঞ্চলের ১৩৭টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছিল ইসি। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা সেদিন জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিলা অঞ্চলে প্রথম ধাপে ৪৫টি, দ্বিতীয় ধাপে ৪৪টি, তৃতীয় ধাপে ৩৪টি ও চতুর্থ ধাপে ১৪টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। এসব উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপে ২৫ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এরও আগে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৩৪৪টি উপজেলায় ভোটের সময় জানিয়েছিল ইসি। ওই সময় বলা হয়েছিল, এ ছয় অঞ্চলে প্রথম ধাপে ১০৮টি, দ্বিতীয় ধাপে ১২১টি, তৃতীয় ধাপে ৭৭টি, ও চতুর্থ ধাপে ৩৮টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।