দেশের তথ্য ডেস্ক:- কক্সবাজারের চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে ওষুধ কম্পানিতে কর্মরত এক বিক্রয় প্রতিনিধিকে। মাত্র ১৭ হাজার টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটায় ছিনতাইকারীর দল।
শনিবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির ভেতরই এই ছিনতাইপরবর্তী গলা কেটে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। তবে ঘটনার সময় থাকা এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রাণে বেঁচে গেছেন।
অবশ্য তাকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খুনের শিকার বিক্রয় প্রতিনিধির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে সরবরাহকৃত তথ্যানুযায়ী নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ এরশাদ (৩২)। তাঁর বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গায় বলা হলেও বাবার নামসহ প্রকৃত ঠিকানা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে হত্যাকাণ্ডস্থলের চারদিকে পুলিশ ঘিরে রেখেছে সিআইডির ক্রাইম সিন দলের অপেক্ষায়। আর সেখানে উৎসুক মানুষও ভিড় করতে দেখা যায়।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল জব্বার জানান- নিহত ব্যক্তি হেলথ কেয়ার নামক একটি ওষুধ কম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই কম্পানির মেডিক্যাল প্রতিনিধি (এমআর) আশিক বিল্লাহ সুমনও হত্যাকাণ্ডস্থলে ছিলেন।
তিনি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের ছনধরা গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে।
আশিক বিল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জানান- আশিক বিল্লাহর ভাষ্যানুযায়ী হত্যাকাণ্ডস্থলে তারা দুজন টাকা গুনছিলেন। সেই মুহূর্তে তিনজনের একটি ছিনতাইকারীর দল ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ছিনতাইকারীরা বিক্রয় প্রতিনিধি এরশাদকে গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় আশিক বিল্লাহর শরীরের একাধিক স্থানেও জখম দেখা যায়।
তাই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য আশিক বিল্লাহকেও পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর পরই সেখানে ছুটে যান চকরিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মহেশখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কৃষ্ণপ্রসাদ ভক্ত, চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বারসহ পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন- প্রতি সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকাটি অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠে। প্রতিনিয়ত ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছিল সেখানে। এতে হাসপাতালে আগত রোগীসহ স্বজন, পথচারী ও আশপাশের বাসিন্দারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সর্বশেষ ছিনতাইকারীর হাতে খুন হওয়ার মধ্য দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যে অনিরাপদ এলাকা তা ফের প্রমাণিত হয়েছে।