মাছ ধরার তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার সময় সমুদ্রে যাওয়া জেলেরা খাদ্য সহায়তা পেলেও সুন্দরবনগামী জেলেরা কোনো সরকারি খাদ্য সহায়তা পাননি। বন ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এখনো ফাইলবন্দি থাকায় উপকূলীয় এই জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উপকূলীয় সাতক্ষীরার সুন্দরবনগামী জেলেরা জানান, ঈদুল আযহা সামনে অথচ নতুন কাপড় তো দূরের কথা, সেমাই কেনার টাকাও জোগাড় করতে পারছেন না। কেউ কেউ জানান, ‘দ্বারে দ্বারে ঘুরে গোশত কুড়িয়ে আনলেও ভাত রান্নার চাল কেনার সামর্থ্য নেই।’
সুন্দরবনে মাছ ধরার অনুমতি পাস নিয়ে জেলেরা নদীতে জাল টেনে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু এই সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারি কোনো খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় দুর্বিষহ দিন কাটছে তাদের।
বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট অফিস ইনচার্জ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবনগামী জেলেদের তালিকা মৎস্য বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো তাদের জন্য খাদ্য সহায়তার সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের সহায়তা দিলে সুন্দরবনে জেলেদের চাপ কমবে, অপতৎপরতাও কমবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জে এম সেলিম বলেন, ‘সুন্দরবনগামী জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া উচিত। বন বিভাগের দেওয়া তালিকা মৎস্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু বনে পাস দেয় বন বিভাগ, সেহেতু তাদেরই আগে এগিয়ে আসা উচিত।’
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ২৩ হাজার ৯২০ জন ও আশাশুনি উপজেলায় ৭ হাজার ৭৩৭ জন সুন্দরবনগামী নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, অনিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
জেলেরা জানান, সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের মতো তাদেরও সরকারি খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা না হলে সামনে ঈদের আনন্দ তো দূরের কথা, জীবনধারণই হয়ে উঠবে দুরূহ।