কুয়েট (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)-ভিসি ইস্যু নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন কুয়েট সংশ্লিষ্ট এক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা রাতুল হাসান। গতকাল রাত ১০টা ২২ মিনিটের দিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় টিউশন শেষে বাসায় ফেরার পথে রাতুলের ওপর এ নির্মম হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রাতুল হাসান জানান, টিউশন শেষে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে হোটেল সিটিইনের পাশের গলিতে যাওয়া মাত্রই ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাকে ঘিরে ধরে। প্রথমেই জিজ্ঞেস করা হয়, “তুই কি কুয়েটের রাতুল?” হ্যাঁ বলার সাথে সাথেই পেছন থেকে কয়েকজন তার মাথা ও মুখমণ্ডলে এসএস রড ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে যায়, নাক ভেঙে যায় এবং সঙ্গে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়।
আত্মরক্ষার জন্য তিনি দৌড়ে পাশের ‘কুডোস’ রেস্টুরেন্টে আশ্রয় নেন এবং বাথরুমে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। হামলাকারীরা রেস্টুরেন্টের বাইরে দাঁড়িয়ে তাকে গালিগালাজ করে এবং রাজনৈতিক হুমকি দিতে থাকে। তারা চিৎকার করে বলে, “ভিসির পদত্যাগ করাস, বাড়াবাড়ি করলে খুন করব!”
স্থানীয়দের সহায়তায় রাতুল প্রথমে সিটি মেডিকেলে চিকিৎসা নেন এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও মানসিকভাবে আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন।
এই ঘটনার পর রাতুল হাসান সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। থানা পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় সচেতনমহল এবং শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, কুয়েট ও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মতপ্রকাশ ও প্রতিবাদের অধিকার হরণ করার জন্য এ ধরনের সন্ত্রাসী কায়দায় দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। রাতুলের ওপর হামলা তারই ভয়াবহ দৃষ্টান্ত।
ছাত্রনেতা ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হওয়াই কি আজ একজন শিক্ষার্থীর জন্য প্রাণনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ালো? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।