হরতালে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ

busness.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক:- 

হরতালে বেশিরভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ
একদিনে হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান
আমদানিনির্ভর ব্যবসায়ীরা বিপাকে
দেশে হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়লে আমাদের লোকসান বাড়বে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে রাজনৈতিক নৈরাজ্য এড়িয়ে চলতে হবে
—আওলাদ হোসাইন মীম, সাধারণ সম্পাদক, নবাবপুর দোকান মালিক সমিতি

হরতাল দিলে রাজনৈতিক নেতাদের কিছু যায় আসে না। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একদিন বন্ধ থাকলে লোকসানের খাতার হিসাব লম্বা হয়। দেশে তারা ক্ষমতা নিয়ে লড়াই করে এদিকে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাই’— এভাবেই নিজের ক্ষোভের কথা জানাচ্ছিলেন পুরান ঢাকার চকবাজারের জয়নুদ্দীন প্লাস্টিক কোং-এর স্বত্বাধিকারী জয়নুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, একদিন সমাবেশ, একদিন হরতাল এভাবে চললে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কারখানা সব বন্ধ করে বসে থাকতে হবে। আমার কারখানায় কাঁচামাল সংকটে উৎপাদন বন্ধ। চট্টগ্রাম থেকে গতকাল রাতে কাঁচামাল আসার কথা থাকলেও হরতালের কারণে এসে পৌঁছায়নি।

পুরান ঢাকার ইসলামপুর এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী নোয়াখালী ক্লথ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আজিজ রহমান। তিনি হরতালে তার লোকসান সম্পর্কে বলেন, আমার চারটি দোকান। একটা ছাড়া বাকি তিনটা বন্ধ। আমাদের খোলা কাপড়ের বড় ক্রেতা হলেন ছোট ও মাঝারি মানের গার্মেন্টস মালিকরা। বিশেষ করে রাজধানীসহ আশপাশের জেলার ক্রেতারা নিজেরা এসে কাপড় ক্রয় করে নিয়ে যান। হরতালের কারণে কোনো ক্রেতাই নেই। আমরা এসব হরতাল রাজনৈতিক নৈরাজ্য চাই না।

দেশের মেশিনারিজ ও ইলেকট্রনিক পণ্যের বড় পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার নবাবপুর এলাকা। এলাকাটি ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ। যারা খুলেছেন অলস বসে আছেন। মিজান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিজান মোহাম্মদ বলেন, আমাদের পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা কলকারখানা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ব্যবসায়ীরা আসেন। হরতালে সব স্থবির হয়ে গেলো। আমাদের পণ্যগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা। ডলার সংকটে আমরা এমনিতেই কোণঠাসা। এর মাঝে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদের আরও লোকসানে ঠেলে দেবে।

ব্যবসায়ী জোটের তথ্য বলছে, পুরান ঢাকার নবাবপুর, শাখারীবাজার, ইসলামপুর, বাংলাবাজার, চকবাজার, মৌলভীবাজার এলাকায় প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যবসায়িক লেনদেন হয়। পুরান ঢাকা এলাকায় দীর্ঘদিন ব্যবসা করছে আওলাদ হোসাইন মীম। তিনি দায়িত্ব পালন করছেন নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। পুরান ঢাকা এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে তার সাথে কথা বলেন আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই ব্যবসা-বাণিজ্যের খারাপ অবস্থা। এখন আবার ফিলিস্তিন-ইসরাইলের যুদ্ধের কারণে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। ডলার সংকট আমাদের আমদানিনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমরা নিয়মিত কর দিয়ে সরকারকেও সহযোগিতা করছি। অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। এ সময় দেশে হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়লে আমাদের লোকসান বাড়বে। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখলে হরতালসহ রাজনৈতিক নৈরাজ্য এড়িয়ে চললে দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।

Share this post

PinIt
scroll to top