দ্রুত বিচারের দাবি জাবিতে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

jabi-st-.jpg

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে বেধড়ক পেটানোর দায়ে অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মো. এজহারুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে৷

সোমবার (২১ আগস্ট) রাতে হল প্রশাসনের জরুরী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল আহমেদ। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হলেন, ওই হলের ওয়ার্ডেন পলাশ সাহা ও সহকারী আবাসিক শিক্ষক আ জ ম উমর ফারুক সিদ্দিক।

এদিকে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব। সোমবার (২১ আগস্ট) এক যৌথ বিবৃতিতে জাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি শিহাব উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিব সোহেল সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত এক বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের উপর বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রতিবারই হামলার ঘটনার সাথে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছে। এ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিবারই কর্মীদের শুধরে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিলেও তার বাস্তবায়ন বিন্দুমাত্র পরিলক্ষিত হয়নি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অতর্কিত হামলার ঘটনা ন্যাক্কারজনক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

এর আগে, গত রবিবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অতিথি কক্ষে শাখা ছাত্রলীগের ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ ব্যাচের কর্মীদের ‘পলিটিকাল গেস্টরুম’ চলাকালীন বাইরে থেকে ভিডিও ধারণ করছে সন্দেহে এক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ধাওয়া করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় হলের অভ্যন্তরের দোকানে অবস্থানরত সাংবাদিক আসিফ আল মামুন উচ্চশব্দ শুনে হল মাঠের দিকে এগিয়ে গেলে ছাত্রলীগ কর্মী তাওসিফ, মো. নাঈম হোসেন, আমিনুর রহমান সুমন, হেলাল মাহমুদ, হৃদয় রায়, জিদান, আদনান, নিরব ও শাফায়েত হোসেন তোহা এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জন তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। মারধরের সময় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা আরেক দফায় তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী।

এসময় শাখা ছাত্রলীগের উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার শাকিল, উপ-মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক জাহিদ হাসান, সহ সম্পাদক রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান, ক্রীড়া বিষয়ক উপসম্পাদক ফয়জুল ইসলাম নিরব, ৪৭ ব্যাচের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের সৌরভ পাল, পরিসংখ্যান বিভাগের মীর তাওহীদুল ইসলাম, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আলী আক্কাস আকাশ (আকাশ তুহিন) , প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মাহীদ ও সীমান্ত মারধরে প্রত্যক্ষ মদদ দেয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি উল্লেখ করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন ক্রিয়াশীল সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, চুয়েট সাংবাদিক সমিতি, বুটেক্স সাংবাদিক সমিতি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাংবাদিক সংগঠন এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেছে।

Share this post

PinIt
scroll to top