জাকির হোসেন,রাজশাহী।
১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত,শোক র্যালী বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় চার নেতার মুরালে পুস্পক অর্পন,অসহায় দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরন, কর্মসুচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ও মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী, মোঃ নাহিদ আক্তার (নাহান) সহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
নাহিদ আক্তার নাহান বলেন ১৫ আগস্ট, বাঙালির শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতি হারিয়েছে ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।৪৮ বছর আগে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার নৃশংসভাবে হত্যা করে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম ও কলঙ্কময় অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিল ঘাতকেরা। তবে ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্থান রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। আজ শোকের দিনে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাযজ্ঞের শিকার তাঁর পরিবারের সদস্যদের।গত শতকের ষাটের দশকের শেষ দিকে দেশে সুপরিচিত অনেক রাজনীতিবিদ থাকলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর নেতৃত্বগুণে অন্যদের ছাপিয়ে চলে আসেন সামনের কাতারে। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে আদর্শিক ভিত্তি করে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা।রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশকে পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন, তখনই পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ তাঁকে হত্যা করে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য।ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সেই রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল; পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করে ঘাতকেরা।সেই কালরাতেই বিপথগামী সেনাসদস্যদের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকেও হত্যা করে ঘাতকেরা।বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।
১৫ আগস্টের সেই হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করে ঘাতকদের বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২১ বছর পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হত্যাকারীদের বিচার শুরু হয়। একই সঙ্গে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং এই দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে উচ্চ আদালত ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এখন পর্যন্ত ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একজন বিদেশে মারা গেছেন। পাঁচজন পলাতক।