দেশের তথ্য ডেস্ক:-
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারের পতন আজ অনিবার্য হয়ে গেছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মানুষের অধিকার নেই। ভোটের অধিকার অনেক আগেই কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন বাক-স্বাধীনতাও কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক অধিকারও কেড়ে নিয়ে ঘরোয়া কর্মসূচিতেও বাধা দিচ্ছে। সরকারের জনসমর্থন এখন তলানীতে। সরকার চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত।
চরমোনাই পীর বলেন, দেশপ্রেমিক জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগ আজ বাঘ-সিংহের ভুমিকায়। কিন্তু জনগণ একত্রিত হলে লেজগুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে। ইতিহাস সাক্ষী, নমরুদ, ফেরাউন ক্ষমতাধররাও টিকেনি, আপনাদেরও পতন অনিবার্য। তিনি বলেন, মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ, ভাল চাইলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশকে সংঘাতের হাত থেকে রক্ষা করুন।
আজ বুধবার (৯ আগষ্ট ) দুপুর ২টায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংঙ্কুয়েট হলে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (PR) পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর সদর থানার তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর সদর থানা সভাপতি আলহাজ্ব আবু তাহেরের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী ফেরদৌস সুমন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও খুলনা মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল, জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান, নগর সহ-সভাপতি মুফতী আমানুল্লাহ, শেখ মুহা. নাসির উদ্দিন, নগর সেক্রেটারী ইমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারী হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব, শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নগর সাধারণ সম্পাদক মুফতী আবদুল্লাহ ইয়াহইয়া, আবু গালিব, মাওলানা দ্বীন ইসলাম, মুফতী মাহবুবুর রহমান, মোঃ সাইফুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের নগর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ইব্রাহিম হোসেন খাঁন, যুব আন্দোলন নগর সহ সভাপতি মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, আব্দুর রশিদ, ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কওমী মাদ্রাসা বিষয়ক হুসাইন আহমেদ, নগর সভাপতি মঈন উদ্দীন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাহদী হাসান মুন্না।
চরমোনাই পীর বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঠিকমতো ভ্যাট-ট্যাক্সও দেয় না, অথচ সব সুযোগ ভোগ করে তারা। তিনি বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে করার সুযোগ দিয়ে দেশকে সংঘাতপূর্ণ অবস্থা থেকে রক্ষা করুন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় পুনরায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। এজন্য জনগণের লাশের উপর দিয়ে হলেও ক্ষমতা শেখ হাসিনার চাই। ‘শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে’ সরকার দলীয় নেতাদের বক্তব্যে দেশকে অনিশ্চিয়তার দিকে নিয়ে যাবে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের মানুষ নানা সঙ্কট ভোগ করছে। নিত্যপণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সারাদেশে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করলেও সরকারের কোন কর্মসূচি নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, আওয়ামী সরকার দেশকে অকার্যকর করে বিচার ও আইন বিভাগকে ধ্বংস করেছে। নির্বাহী বিভাগ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকেও ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগ বার বার সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে। অথচ তারাই নিজেদের স্বার্থে বার বার সংবিধান পরিবর্তন করেছে।
অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, অর্থ লুট-পাট, দুর্নীতি, দুঃশাসন, অর্থ পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। তারা উন্নয়নের নামে নিজেদের উন্নয়ন করেছে। জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে এর বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানুষ মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা বঞ্চিত।
তিনি বলেন, সরকারের প্রশাসনের লোকজন কাকে কিভাবে সম্মান করতে হয়, তা জানে না। একজন শীর্ষ আলেমের সাথে বেয়াদবিপূর্ণ আচরণ মেনে নেয়া যায় না। দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি-ডাকাতির উন্নয়ন হয়েছে। সর্বত্র ঘুষ ও দুর্নীতিতে সয়লাব। প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ বলছেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচির দিন আপনারা কেন সমাবেশ করবেন? তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করলে আমরা কেন পারবো না? তিনি বলেন, বড় দলগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ইসলামী আন্দোলনও রাজপথে শক্তি প্রদর্শণ করবে, ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওঃ শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম তুষার, আমজাদ হোসাইন, আব্দুল মান্নান, সরোয়ার বন্দ, আব্দুল লতিফ, মাওঃ মাহবুবু আলম, মোঃ রেজাউল করিম, মাওঃ নাসিম, মোমিন ইসলাম নাসিব, মাসুম বিল্লাহ, আনোয়ার হোসেন, কারী জামাল, আব্দুর রহমান সবুজ, রবিউল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস, চান মিয়া, মিরাজ মাহাজন, মোহাম্মদ জাবেদ, আফজাল হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেন, শামসুল হক, সেলিম হাওলাদার, রিপন শেখ, রমজান হাওলাদার, মইনুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর, বখতিয়ার, আলামিন, হেলাল উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান, ইমন হাওলাদার, মোস্তফা আল গালীব, হাবিবুল্লাহ মিসবাহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।