দেশের তথ্য ডেস্কঃ
খুলনা জেলার পাইকগাছার চাঁদখালী ইউনিয়নের কালিদাসপুর গ্রামের ছাত্র রকিবুল হাসান রকির মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগ এবং খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের মোঃ জাফর শেখের ছেলে মোঃ হামিদ শেখের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগ বিষয়ে কিছুই জানেন না বাদীগন ও নিহতদের পরিবারবর্গ। সরকারি সাহায্যের কথা বলে খুলনার একটি কলেজের ছাত্র কয়েকজনকে সাথে করে নিয়ে তাদের বাড়িতে পৃথক পৃথক সময়ে যেয়ে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে এই অভিযোগসমুহ দাখিল করেছে বলে উভয় পরিবার নিশ্চিত করছে।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিগত স্বৈরাচারী পতন আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী ঢাকার আশুলিয়ায় তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের মোঃ জাফর শেখের ছেলে মোঃ হামিদ শেখের মৃত্যু হয় । সেই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত ৫ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকার মানবতা বিরোধী ট্রাইব্যুনালে নিহতের মা রাশিদা বেগম বাদী হয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। আশুলিয়ার শহীদ মোঃ হামিদ শেখের পিতা মোঃ জাফর শেখ এবং অভিযোগের বাদী ও তার মা রাশিদা বেগমের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন, আমরা ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোন অভিযোগ দাখিল করিনি ।
খুলনার বিএল কলেজের জনৈক ছাত্র ( বাদীর অনুরোধে নাম প্রকাশ করা হলো না) কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সরকারী অনুদানের লোভ দেখিয়ে কাগজে সই করে নেয় এবং বলে দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুদান চলে আসবে। আন্দোলনে শহীদ হামিদের মা মোবাইলে বার বার যোগাযোগ করলে সেই ছাত্র আর মোবাইল ধরছে না বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।
অপরদিকে, গত ৫ আগস্ট বিকেলে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর আনন্দ মিছিল করে পাইকগাছার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও গ্রামবাসী। এ সময় বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা টাঙাতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃর্শে মারা যান উপজেলার কালিদাসপুর গ্রামের ছাত্র রকিবুল হাসান রকি। এ ঘটনার তিন মাস পর গত ২১ নভেম্বর রকিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন জমা দেওয়া হয়। বাদীর আনিত অভিযোগে খুলনা মহানগরীতে বসবাসরত ১৪জন পেশাদার সাংবাদিক, কেসিসির কাউন্সিলর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদদের নামের সাথে কবি-সাহিত্যিকও রয়েছেন। এই অভিযোগে খুলনায় কর্মরত সাংবাদিকদের পেশাগত সাংগঠনিক পদবী দেখে অনেকেই অভিযোগ নিয়ে নানরকম প্রশ্ন করছেন।
নিহত ছাত্র রকিবুল হাসান খুলনার বিএল কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। অভিযোগের বাদী নিহতের পিতা রফিকুল গাজী জানান, তিনি চায়ের দোকানী, অল্প আয় দিয়ে সংসার চলে। খুলনা থেকে দুটি কলেজ ছাত্র বাড়িতে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা পরিচয় দিয়ে ছেলের বিষয়ে নানা কথাবার্তা জিজ্ঞাসা করে এবং ছেলে নিহত হয়েছে বলে অনুদান পাবে বলে কিছু কাগজে সই করতে বলে, পরে লোকমুখে মামলার খবর শুনতে পান বলে এ প্রতিবেদককে জানান ।
এদিকে,দুইটি পৃথক অভিযোগে কাকতালীয়ভাবে খুলনা বিভাগীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির ৪জন নেতার নাম রয়েছে। অপরদিকে, ঘটনা দুটি ৫ অগাষ্ট ঢাকার আশুলিয়া ও খুলনার পাইকগাছায় ঘটলেও কাকতালীয়ভাবে খুলনার গিলাতলা নিবাসী এ এস এম মুনজির ফাহিম নামের ব্যক্তি উভয় অভিযোগে স্বাক্ষী রয়েছেন।