দেশের তথ্য ডেস্ক ঢাকা প্রতিনিধি :- ‘জাতির পিতাকে হত্যা করার পর ইসলামের নাম নিয়ে অনেকে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম প্রচার-প্রসারে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রবিবার সকালে পঞ্চম পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কোনো ভবন ছিল না। আমি ১০ তলা ভবন নির্মাণ করে দেই। সব জেলায় স্থায়ী অফিস ছিল না, মাত্র ৩৪টি জেলায় অফিস ছিল। আমি সরকারে আসার পর প্রতিটি জেলায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের জন্য অফিসের ব্যবস্থা করে দেই ও কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।
’
সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩-১৪ সালের মতো বিএনপি-জামায়াত আবারও আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে। গতকালকে দেখেছেন- কতগুলো বাস পুড়িয়েছে। চলন্ত বাস, ট্রেনে তারা আগুন দিয়েছে। মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়েছে, সবখানে আগুন দিয়েছে।
২০১৩-১৪ তে পুড়িয়েছে। গতকালকেও আমরা তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের নমুনা আবারও দেখলাম। বিএনপি-জামায়াত আবার আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশ গড়েছেন, অন্যদিকে ইসলাম প্রচারের জন্য টঙ্গীতে ইজতেমার জায়গা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্মাণ করেছেন। কাকরাইলে মসজিদের জায়গা দিয়েছিলেন, অল্প খরচে বাংলাদেশের মানুষকে হজে পাঠানোর জন্য জাহাজের ব্যবস্থা করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু মাদরাসা বোর্ডের স্বীকৃতি দিয়েছেন। বাংলাদেশ ওআইসির সদস্যপদ লাভ করে জাতির পিতার আমলেই।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় আসার পর আমি যখন বায়তুল মোকাররমের উন্নয়নকাজের ব্যবস্থা হাতে নিলাম, ২০০১-এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ওই সময় খালেদা জিয়া এই মসজিদের কাজ বন্ধ করে দেয়। ৮ বছর পর আমরা আবারও ক্ষমতায় আসি, এরপর নতুনভাবে মসজিদটি নির্মাণ করি। ক্যান্টনমেন্টে একটা বড় মসজিদ করতে চেয়েছিলাম, খালেদা জিয়ার কথা ছিল- এতবড় মসজিদে কে নামাজ পড়তে আসবে!
মুষ্টিমেয় কয়েকটি মানুষের জন্য আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম বিশ্বের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদের সঙ্গে কারো ছেলে-মেয়ে যাতে জড়িত না হয়। আমি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সব ইমামদের এ বিষয়ে, বিশেষ করে শুক্রবার জুমার খুতবার সময় সকলকে সামাজিক বিষয়গুলোতে সচেতন করুন, আমরা চাই নতুন প্রজন্ম যেন জঙ্গিবাদে জড়িত না হয়।
ইসলামের সঠিক বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন। মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ ওযু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।
এছাড়া মসজিদে হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা ও ইসলামিক কনফারেন্স রুম রয়েছে।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং ইসলামী দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধাও আছে এই মসজিদে।