দেশের তথ্য ডেস্কঃ
পূজা করতে হলে এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা। প্রশাসন, সাংবাদিক বা অন্য কাউকে বিষয়টি জানানো হলে হত্যা করা হবে- এমন হুমকি দিয়ে পাঠানো উড়োচিঠিতে আতঙ্কিত খুলনার দাকোপ উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
উপজেলার চারটি মন্দিরের ঠিকানায় চিঠি আসার পর মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
হুমকির চিঠি পাওয়া মন্দির চারটি হলো, সুতারখালি দুর্গা পূজা মন্দির, শ্রীনগর মন্দির, রামনগর বিনাপানি মন্দির ও কালিনগর বাজার সর্বজনীন মন্দির। ডাকে পাঠানো চিঠিগুলো আসে বুধ ও বৃহস্পতিবার।
প্রত্যেকটি চিঠি কম্পিউটার কম্পোজড এবং মন্দিরের নামগুলো হাতে লেখা। চারটি চিঠির ভাষা একই। এতে লেখা রয়েছে, ‘শোন এবারে ২০২৪ সালের দুর্গা পূজা করতে হলে তোদের প্রত্যেক মন্দিরের পক্ষ থেকে চাঁদা দিতে হবে পাঁচ লক্ষ টাকা। তা না হলে তোরা কোনোভাবেই পূজা করতে পারবি না। হানিফের প্রজেক্টে যেমন করেছি, তোদের পরিণতিও তেমন হবে। সমুদয় টাকা এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রস্তুত রাখবি। তোদের কালিনগর বাজারে যেখানে দিতে বলব সেখানে দিয়ে যাবি। পরে জানাবো সেটা। এসব কথা যদি প্রশাসন মহল, সাংবাদিক বা ভিন্ন কাউকে জানাস তবে তোদের কচুকাটা করবো কথাটা মনে রাখিস । তোদের পরিবারও রেহাই পাবে না। তোদের আশেপাশের সকল মন্দিরকেও গোপনে বলবি। সব মন্দিরের নাম আমরা জানি না। প্রশাসন, সেনাবাহিনী সব আমাদের কেনা, চালাকি করে কোনো লাভ হবে না। টাকা কিন্তু দিতেই হবে। আল্লাহর কসম টাকা না পেলে তোদের কেটে টুকরো টুকরো করবো, তোরা আমাদের নজরে আছিস।’
দাকোপের কামারখোলা সার্বজনীন দুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শেখর চন্দ্র গোলদার নিউজটাইমকে বলেন, ‘এ ধরনের চিঠি পাওয়ার পরে আমাদের মধ্যে আতংক কাজ করছে। আমরা পূজার আয়োজন করব কিনা সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।’
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হুমকি পাওয়ার ঘটনায় শুক্রবার চারটি মন্দির থেকে জিডি করা হয়েছে। উপজেলার সব মন্দিরের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে টহল দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি করে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে। এছাড়া ইউনিয়নভিত্তিক দায়িত্বে থাকা উপ পরিদর্শকরা (এসআই) নিয়মিত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করছেন। আশা করা যায় কোনো সমস্যা হবে না।’