চাদর গায়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে অনুষ্ঠেয় তাজিয়া মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ।

chador.png

দেশের তথ্য ডেস্ক ঢাকা প্রতিনিধি :-  পবিত্র আশুরা উপলক্ষে অনুষ্ঠেয় তাজিয়া মিছিলে চাদর গায়ে দিয়ে অংশ নেওয়া যাবে না। এ ধরনের লোকদের হোসেনি দালানের আশপাশে এবং তাজিয়া মিছিলের আশপাশে ঘোরাফেরা করতে দেওয়া হবে না। এমনকি উচ্চ শব্দে ঢাকঢোল বাজানোও নিষিদ্ধ থাকবে। হোসেনি দালান ও এর আশপাশে বম্ব ডিসপোজাল টিম ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালানো হবে। পুরো এলাকা থাকছে সিসি ক্যামেরার মনিটরিংয়ের আওতায়।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুরান ঢাকার হোসেনি দালানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, তাজিয়া মিছিলে উচ্চ শব্দে কোনো ধরনের ঢাক-ঢোল বাজানো যাবে না। অনেকেই গায়ে আঘাত করে নিজেকে রক্তাক্ত করে মাতম করেন। এটি না করতে তিনি শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। পবিত্র আশুরার দিন পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাজিয়া মিছিল বের করে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা। গত ২৪ জুলাই থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় তাজিয়া মিছিল হচ্ছে। তবে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আগামী শনিবার ২৯ জুলাই সবচেয়ে বড় তাজিয়া মিছিল বের হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ওইদিন পুরান ঢাকার হোসেনি দালান ও এর আশপাশের এলাকাসহ সন্দেহভাজন এলাকায় বম্ব ডিসপোজাল টিম ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালানো হবে। ইতোমধ্যেই ইমামবাড়ার সার্বিক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকা মনিটরিং করা হবে। আগামী ২৯ জুলাই ১০ মহরম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে দিবসটি স্বাভাবিকভাবে পালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলে জঙ্গিরা হামলা চালায়। জঙ্গিদের তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড দিয়ে চালানো সেই হামলায় দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে ডিবি পুলিশ। অভিযুক্ত করা হয়েছে ১০ জনকে। যাদের অনেকেই পলাতক। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি হামলাটি চালিয়েছিল।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এমন ঘটনার পর থেকেই ইমামবাড়ার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ইতোমধ্যেই আয়োজকদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশুরার তাজিয়া মিছিলে ঢোকার আগে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করা হবে। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি ও লম্বা লাঠি বহন করা যাবে না। ইমামবাড়ায় আগতদের আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরে তল্লাশির পর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। চারপাশে থাকবে পুলিশের চেকপোস্ট।

প্রসঙ্গত, হিজরি পঞ্জিকার ১ হাজার ৩৩২ বছর আগের ১০ মহরম মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। বাংলাদেশে যথাযোগ্য ধর্র্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। পবিত্র আশুরার দিন পুরান ঢাকার ইমামবাড়ার আশপাশের রাস্তায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

Share this post

PinIt
scroll to top