দেশের তথ্য ডেস্কঃ
কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের মুখে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি।
বুধবার (১০ জুলাই) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় জরুরি সেবা পরিবহন বাদে অন্য সকল যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, দুপুর পৌনে একটার দিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির গাড়ি আটকে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গাড়িটি বাংলামোটর থেকে মিন্টো রোডের দিকে যাচ্ছিল। তবে সে গাড়ি যেতে দেয়নি আন্দোলনকারীরা। পরে বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেত্রী হেঁটে মিন্টো রোডের দিকে চলে যান।
এ সময় তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের চলমান ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির আওতায় রাজধানীর কাওরানবাজার ও মহাখালী আমতলী রেললাইন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এর ফলে ঢাকা থেকে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে আন্দোলন শুরু হয়। সকালে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, বাংলামোটর, ফার্মগেট, আগারগাঁও ও মহাখালীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ব্লক করে দেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাওরানবাজার রেলগেট ও মহাখালী রেলক্রসিংয়ে কাঠের গুঁড়ি ফেলে আন্দোলন করতে দেখা যায়। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুরে কাওরানবাজার ও মহাখালী রেলগেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেললাইনের ওপর কাঠের গুঁড়ি ও বাঁশ ফেলে অবরোধ করছেন। এ ছাড়াও রেলক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ফেলেও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে রেলগেট দিয়ে কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারছে না। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী গাড়িগুলো চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা থাকবে বলে রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ। তবে এই রায়কে ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
তারা বলছেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে নির্বাহী বিভাগ থেকে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল না করার আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, আমরা কোনো ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি- সংসদে আইন পাস করে সরকরি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। এই দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।