বিদ্যার দেবী বাগবানী মা সরস্বতী পূজা সারা দেশের ন্যায়খুলনার কয়রাতেও আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সরস্বতী পূজা হিন্দু বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠেয় একটি অন্যতম প্রধান হিন্দু ধর্মীয় উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রী পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। শ্রী পঞ্চমীর দিন অতি প্রত্যুষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ছাত্র-ছাত্রীদের গৃহ ও সার্বজনীন পূজা মন্ডপে দেবী সরস্বতী পূজা করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিনে শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণ ভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথা ও প্রচলিত। পূজার দিন সন্ধ্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও সার্বজনীন পূজা মন্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজা বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। তবে প্রাচীনকালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতিমাসের শুক্লা পঞ্চমি তিথিতে ধোয়া চৌকির উপরে তাল পাতার তাড়ি ও দোয়াত কলম রেখে পূজা করার প্রথা ছিল। আধুনিক কালে দেবীপ্রতিমার মূর্তি তৈরি করে উজার প্রচলন বিদ্যমান।
সরস শব্দের অর্থ হল জল। সুতরাং সরস্বতী শব্দের অর্থ হলো জনবতি বা নদী। অনেক পন্ডিতরাই মনে করেন দেবী সরস্বতী প্রথমে ছিল নদী। পরে তিনি দেবী হিসেবে পূজিত হন। তিনি চেতনা ও জ্ঞানের দেবী। আধুনিক কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজার প্রচলন হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের কয়রা উপজেলা সভাপতি অরবিন্দ কুমার মণ্ডল বলেন, ২০২৫ সালের সরস্বতী পূজা তিথিগত কারণে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ২ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুর ১২ঃ৪৩ মিনিট থেকে ৩ফেব্রুয়ারী সোমবার ১০ঃ২৮ মিনিট পর্যন্ত এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। দিনটি উপলক্ষে অত্যন্ত সাড়ম্বরের সহিত বিদ্যার দেবী বাগবানী মা সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।