সমাজচ্যূত সেই ৪ পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইল মসজিদ কমিটি, ফিরবেন না ইমাম

1720189708-cc4f67ba3302868816dffdd10eaa8d65.jpg

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জুমার নামাজের বয়ানে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলে ইমামকে চাকরিচ্যূত করার প্রতিবাদ জানিয়ে সমাজচ্যূত হওয়ার চার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে মসজিদ কমিটি। একই সঙ্গে তাদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তারা আগের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করবেন সমাজে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) জুমার নামাজের পরে ওই এলাকায় এক বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একিমিত্র চাকমা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একিমিত্র চাকমা, মতলব সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম, দুদক সমন্বিত চাঁদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আজগর হোসেন, মতলব উত্তর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন রনি, দুদকের উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুজ্জামান ডলার, মতলব উত্তর প্রেসক্লাব সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম, সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর সবুজ মিয়া, জোড়খালী উত্তরপাড়া বাইতুল নাজাত জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ছানাউল্লাহ, ওই মসজিদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া ইমাম মাওলানা রহমত উল্লাহ, প্রতিবাদী পোস্টদাতা সাইফুদ্দিন বেপারী প্রমুখ।

বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সমাজে বিভেদ তৈরি করে। এমন কোনো কাজকে উৎসাহ দেওয়া ঠিক না।

সমাজে সবাইকে মিলেমিশে চলতে হবে।
এর আগে ঈদুল আজহার পরে জুমার নামাজের বয়ানে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়ে চাকরি হারান জোড়খালী উত্তরপাড়া বাইতুল নাজাত জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রহমত উল্লাহ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া এবং কমেন্ট করায় চার পরিবারকে সমাজচ্যূত করার ঘোষণা দেয় মসজিদ কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কালের কণ্ঠে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।

তবে ঘুষের বয়ান দিয়ে চাকরিচ্যূত ইমাম আর ওই মসজিদে ফিরতে চান না। কমিটিও তাকে ফেরাতে আগ্রহী না। ইমাম মাওলানা রহমত উল্লাহর জানিয়েছেন, যেখানে তাকে অপমান করা হয়েছে সেখানে তিনি ফিরতে চান না। এ ছাড়া এই এলাকায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন।

মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইমামকে চলতি মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।
আজকের বৈঠকে দুদকের সহকারী পরিচালক বলেন, মসজিদের ইমাম সাহেব জুম্মার নামাজের আগে যে বয়ান করেন তাতে সমাজের নানা অসঙ্গতি দূর করতে মানুষকে জানান দেন। এতে ব্যক্তিবিশেষ বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কোনো কথা বলেননি। এর সঙ্গে দুর্নীতি কিংবা ঘুষ ও সুদের বিরুদ্ধে কথা বলতেই পারেন। ছোট হোক বড় হোক, এখানে কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকেন তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।

শান্তি শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রের নিয়ম মেনে চলা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব কর্তব্য। এর বাইরে কোনো মৌলিক অধিকার হরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম।

Share this post

PinIt
scroll to top