শিক্ষার্থী মায়েরাও চান ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ সুবিধা

1719548425-5930d9de568c81f03aad45c839fb2dd3.webp

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী তাসনীম হাসান (ছদ্মনাম)। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে মা হন। স্বামী ঢাকার বাইরে থাকেন। সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে তাসনীমের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের তিনটা বছর হারিয়ে গেছে (ইয়ার লস।

পরে এক আত্মীয়কে বাসায় এনে অনেক কষ্টে একটি সেমিস্টার শেষ করেন তিনি।তাসনীম বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী মায়েদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের (ডে কেয়ার সেন্টার) সুবিধা থাকলে পড়াশোনায় গ্যাপ দিতে হতো না। আক্ষেপ করে বলেন, এটা আসলেই দুঃখজনক যে এটুকু সুবিধা ক্যাম্পাসে মায়েরা পান না।

তাসনীমের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁদের সন্তান আছে।

অথচ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের সুবিধার অভাবে পড়াশোনা ঠিকমতো চালিয়ে যেতে নানা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তিনটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু এগুলোতে শুধু শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাচ্চাদের রাখা যায়।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী ৩৬ হাজার ৬৭৬ জন।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মুন্নি বলেন, ‘বাবুকে নিয়েই ক্লাসে আসতে হয়েছিল।

এমনও হয়েছে যে শুধু উপস্থিতির জন্য ক্লাসে এসেছি। ক্লাসে ঠিকঠাকভাবে মনোযোগ দিতে পারতাম না। যদি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের সুবিধা থাকত, তাহলে আমি ক্লাস ঠিকঠাকভাবে করতে পারতাম। আমাদের কমন রুমে ১০ থেকে ১৫ জন নারী শিক্ষার্থীকে তাদের বাচ্চার সঙ্গে দেখতাম। যদি শিক্ষার্থী মায়েদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের সুবিধা থাকত, তাহলে সবাই ভালোভাবে ক্লাস পরীক্ষা দিতে পারত।’এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে তিনটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তা ছাড়া এসব কেন্দ্রে আলো-বাতাসসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ‘ছায়ানীড়ে’ ৪৫ জন শিশু, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ২৫ জন শিশু এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ১০ জন শিশুর যত্ন-পরিচর্যা করা সম্ভব। অর্থাৎ তিনটি ডে কেয়ার সেন্টারের ধারণক্ষমতা মাত্র ৮০ জন শিশু। ইউজিসির প্রতিবেদন হিসাব করে দেখা গেছে, প্রতি ২৮ জন শিক্ষকের অনুপাতে মাত্র একজন শিক্ষকের একজন শিশু শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের সুবিধা পেতে পারে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের এলাকাগুলোতে কোনো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র না থাকায় বেশ খানিকটা দূরে এসেই এই তিনটি কেন্দ্রে শিশুদের রাখছেন বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকরা। এ জন্য তাঁরা বিজ্ঞান অনুষদের এলাকায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের কথা জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না এবং সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমাদের মাস্টারপ্ল্যানে সরাসরি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’

Share this post

PinIt
scroll to top