দেশের তথ্য ডেস্কঃ
কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ধর্ষণচেষ্টার ভয়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে দেবিদ্বার পৌরসভার একটি হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ও তার পরিবারের লোকজন।
অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম লিটন সরকার। তিনি বরকামতা ইউনিয়নের বাগুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই গৃহবধূ দাবি করেন, গত ১ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে লিটন সরকার আমার স্বামীর অবর্তমানে ঘরে জোর করে প্রবেশ করে আমার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ও ধর্ষণচেষ্টা চালায়। তাকে অনুরোধ ও নিষেধ করলে সে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে লাশ গুমের হুমকি দেয়। পরে আমার স্বামী ঘরে এলে সে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। তার কাছে আমার স্বামীর স্বাক্ষরিত ৪টি ব্যাংক চেক রয়েছে ঘটনার পর থেকে সে ওই চেক দিয়ে আমার স্বামীর নামে চেক জালিয়াতির মামলা করার হুমকি দেয়। স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তি তাকে সেল্টার দিচ্ছে। তার নামে আদালতে হত্যাসহ প্রায় এক ডজনের ওপর মামলা চলমান আছে।
লিখিত বক্তব্যে ওই গৃহবধূ আরও বলেন, আমার দুটি সন্তান ও স্বামী নিয়ে লিটন সরকার ও তার পালিত গুণ্ডাবাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তারা একের পর এক আমাকে হুমকিধমকি দিচ্ছে। আমি আজ নিরুপায় হয়েই আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। দয়া করে আপনারা আমার পাশে দাঁড়ান, আমি থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে আমার মামলা এখনো নথিভুক্ত করা হয়নি। আমি আমার স্বামী ও দুই সন্তানের প্রাণ ভিক্ষা চাই। তার হাত থেকে আমাদের বাঁচান।
সংবাদ সম্মেলনে ওই গৃহবধূর বড় ভাই নাইম হোসেন বলেন, লিটন সরকারে বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। যে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে তার নামেই তিনি মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমার বোনকে প্রতিবাদ করায় আমার নামেও মামলা দেয়। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে একটি সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে ওই গৃহবধূর বড় ভাই নাঈম হোসেন বলেন, আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে পরিবারের সদস্যরা এলাকা ছাড়া। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিটন সরকার বলেন, আমাকে হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে আহত করার ঘটনায় ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে আমি একটি মামলা দায়ের করি। ওই মামলা ধামাচাপা দিতে তিনি এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আপনি এলাকায় যান এমন কোনো প্রমাণ পাবেন না। প্রমাণ পেলে যা শাস্তি হয় তা আমি মাথা পেতে নেব।
দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, ভুক্তভোগী এক নারী লিটন সরকারের নামে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত চলছে, তদন্তে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।