দেশের তথ্য ডেস্ক –
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের পথে ছুটতে শুরু করেছে মানুষ। তবে ঈদ যাত্রার শুরুর দিন গতকাল বুধবার ট্রেনের জন্য অপেক্ষা—ঘরমুখো যাত্রী সাধারণের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঙ্ক্ষিত ট্রেন পেতে যাত্রীদের এক থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
প্রথম দিনের ঈদ যাত্রা ভোগান্তি দিয়েই শুরুআবার বাসে করেও গতকাল অনেকে রাজধানী ছেড়েছে।
এই যাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে প্রথম দিন বাসে উপচে পড়া ভিড় সৃষ্টি হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আজ বৃহস্পতিবার বাসে যাত্রীর চাপ বাড়বে।
কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ওই স্টেশন থেকে সব কটি ট্রেন বিলম্বে ছেড়েছে।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। বিশেষ করে গরমে নারী ও শিশুরা বেশি সমস্যায় পড়ে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ভোর ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে। পর্যটক এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে গেছে ৬টা ৫০ মিনিটে।
সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি স্টেশন ছেড়েছে সকাল সাড়ে ৮টায়।
এ ছাড়া কিছুটা দেরি করে ছেড়ে গেছে এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার, চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী কমিউটার, রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস, ঈদ বিশেষ ট্রেন দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল, জামালপুরগামী জামালপুর এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন।
ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রী ও স্টেশনের একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকেই ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছিল। কোনো কোনো আন্ত নগর ট্রেন দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে ছেড়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গতকাল কমলাপুর স্টেশন থেকে ৬৬ জোড়া ট্রেন ছেড়ে গেছে।
আর ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছেড়ে গেছে একটি। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন ট্রেনের সঙ্গে ২৫টির মতো বাড়তি বগি যুক্ত করা হয়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঈদ যাত্রার প্রথম দিন হিসেবে সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। শুরুর দিকে দুটি ট্রেনের রেকে কোচ সংযোজন ভুল হওয়ায় সেগুলো সংশোধন করতে ঘণ্টাখানেক বেশি সময় লেগেছে। ফলে এই ট্রেন দুটির বিলম্বের জের অন্য ট্রেনগুলোর ওপর পড়েছে। এ কারণে ২০-৩০ মিনিট করে বিলম্ব হয়েছে।
ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকায় আসার পর ট্রেনগুলো আবার ছেড়ে যায়। ট্রেনগুলো ঢাকায় পৌঁছার পর ক্লিনিং ওয়াটারিং করতে হয়। এর জন্য প্রতিটি ট্রেনে অন্তত এক ঘণ্টা সময় লাগে।
রাজধানীতে বেড়েছে যানজট
ঈদের আগমুহূর্তে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোয় যানজট বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় বিপণিবিতান রয়েছে, সেখানে গাড়ির গতি কমে আসছে। আবার বিভিন্ন এলাকায় পশুর হাটের কারণে যানজট দীর্ঘ হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৩ কিমি যানজট
টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলছে চার লেনের কাজ। চালকদের বেপরোয়া গতি ও ঈদকে কেন্দ্র করে ওই সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ভোর থেকে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপার পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে বেশ ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
বাড়তি ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের টার্মিনালের ভেতরে বাসে ওঠানামা করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে সড়কে যাত্রী ওঠানামা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান। একই সঙ্গে ঈদ যাত্রাকে কেন্দ্র করে কোনো পরিবহন বাড়তি ভাড়া আদায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রস্তুতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।