শেখ শামীমুল ইসলাম, দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধিঃ খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার খান মোজাফফর হোসেন ডেইরি ফার্ম ও গরু হৃষ্টপুষ্ট খামারে কোরবানির জন্য গরু লালন পালন করে বড় করা হয়েছে। ওই খামারে সম্পূর্ণ প্রকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে গরু। এর মধ্যে রয়েছে দেশি, শাহিবল, শংকরসহ নানা জাতের ষাড়। এখানে ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকার ষাড়ও রয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এসব গরু লালন-পালন করে হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। বিশেষ করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খুদের ভাত, আলু সিদ্ধ, মসুর, খেসারি ডাল, ঘাস, বুটের খোসা, ভুট্টা, গম ইত্যাদি খাবার খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট থাকছে গরুগুলো। আর এ খাবার গুলো খুবই কম খাওয়ানো হয়। ৭০/৮০ টা গরুকে ৫ কেজি চালের জাওন তৈরি করে খাওয়ানো হয়। মূল খাবার ঘাস ও কুটা। ওই খামারের গরুর চাহিদা সকলের কাছে বেশি থাকে। তাই এ খামারের গরু বিক্রয়ের জন্য কোনো হাটে নেওয়া লাগেন। খামার থেকেই সব গরু বিক্রি হয়ে যায়। খামারের মালিক এরশাদ আলী খান সবুজ ও ম্যানেজার রুবেল হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি ৫/৬ মাস আগে ছোট সাইজের গরু পাশের ডুমুরিয়া, তালা, শাহপুর, যশোর, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করেন। ছোট এসব গরু লালন-পালন করে কোরবানির উপযোগী করে তুলেছেন। খামারের গরু মোটাতাজাকরণে ইনজেকশন, ট্যাবলেট বা কোনো ধরনের বড়ি ব্যবহার করেন না তিনি। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক রয়েছে খামারে।
৫ জন শ্রমিক ও নিজেদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কোরবানির জন্য গরুগুলো বড় করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিশাল শেডে ৮০টার মতো ষাড় অনেকটা সন্তানের মতোই লালন-পালন করা হয়েছে। এবারে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে গরু মোটাতাজা করণে খামারিদের কষ্ট হয়েছে। তাই সেভাবে দাম চাওয়া হচ্ছে। খান মোজাফফর হোসেন ডেইরি ফার্মে গরু গাড়িতে ওঠানো ও বাসাবাড়িতে পৌঁছানোর সুবিধা রয়েছে। এছাড়া গবাদিপশু বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সনদপত্র প্রদান করা হয়ে থাকে। এসব নানা কারণে খামারে গরু ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ছে। শুধু ঈদুল আজহার কোরবানির জন্য গবাদিপশু নয়, বিয়েশাদি ও অনুষ্ঠানের জন্যও গরু সরবরাহ করে থাকে খামারটি। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ খামারটি পরিদর্শন করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। পেয়েছেন অগণিত উদ্যোক্তা পুরস্কার। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে মাত্র ৫৫টি গরু নিয়ে হৃষ্টপুষ্ট খামার ও ডেইরি ফার্মটি চালু করেন। দিঘলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফজলুল করিম এ প্রতিবেদককে জানান, মেসার্স খান মোজাফফর হোসেন হৃষ্টপুষ্ট ও ডেইরি ফার্মটি একেবারে ব্যতিক্রম। মালিকের সার্বিক তত্বাবধানে প্রাকৃতিক উপায়ে গরুগুলো লালন-পালন করা হয়েছে।
ফলে ক্রেতার কাছে এসব গরুর চাহিদা বেশি। মেসার্স খান মোজাফফর হোসেন হৃষ্টপুষ্ট ও ডেইরি ফার্মটি পরিবেশ বান্ধব। এটি খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় খামার ও ডেইরি ফার্ম। গরুর শেড সবসময় পরিস্কার, ঝকঝকে। যা দেখতে খুবই ভালো লাগে। তিনি খামারের মালিক এরশাদ আলী খান সবুজের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এরশাদ আলী খান সবুজ চাকরি করার পাশাপাশি নিজেই খামার ও ফার্ম করে লাভবান হয়েছেন। তিনি আরও বলেন তার ফার্মের অধিকাংশ গরু। বড় ও দামী। তাই তার গরুগুলো খুলনা শহরের লোকজন ফার্ম থেকে কিনে নিয়ে যান।