দিঘলিয়ায় সাড়ে তিন মাস আগে রাস্তার মাটি খুড়ে রেখেছে ঠিকাদার জনদুর্ভোগ চরমে

445379571_1207673613914042_5556500178040936513_n.jpg

শেখ শামীমুল ইসলাম, দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধিঃ দিঘলিয়ায় খুলনা এলজিইডির KBS প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন বারাকপুর ও দিঘলিয়া ইউনিয়নে ৩ টি পাকা রাস্তা নির্মাণে ঠিকাদারের নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাড়ে ৩ মাস আগে রাস্তার বেডের মাটি খুড়ে ফেলে রেখেছে। জনদুর্ভোগ চরমে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছে বলে জানা গেছে। দিঘলিয়া প্রকৌশলী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এলজিইডি খুলনার KBS প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের বারাকপুর লাখোহাটি গ্রামে ২ টি রাস্তা ও দিঘলিয়া ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের ১টি রাস্তা পাকা করণ কাজ। উক্ত রাস্তা ৩ টি নির্মাণ কার্যাদেশ পায় খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার আইচাতীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোঃ সিফাত এন্টারপ্রাইজ যার স্বত্ত্বাধিকারী আমীর হোসেন। উক্ত রাস্তা ৩ টার মধ্যে ফরমাইশখান গ্রামের ৫৬৬ মিটার রাস্তার সুপারভিশনের দায়িত্বে প্রকৌশলী এনামুল হক এবং বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের ২টা রাস্তা মিলে ১৪৪০ মিটার রাস্তার সুপারভিশনের দায়িত্ব সার্ভেয়ার রুবেল হোসেনের। উক্ত রাস্তা ৩ টার ঠিকাদারী আমীর হোসেন পেলেও উক্ত রাস্তা ৩ টার কাজ করছেন এলাকার সজীব নামে অপেশাদারী ব্যক্তি। খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প KBS প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন এ রাস্তা ৩ টা নির্মাণে এলাকাবাসীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিম্নমানের ইট, খোয়া ব্যবহারের চরম অভিযোগে সোচ্চার হয়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হরিপদ মাঠ পর্যন্ত আনুমানিক প্রায় ৯০০ মিটার রাস্তাটি নির্মাণ কাজের নির্দেশ পাওয়ার পর উক্ত ঠিকাদার দিঘলিয়ার সজিব নামে জনৈক ব্যক্তিকে সাব কন্ট্রাক্ট দেন। সাড়ে ৩ মাস আগে সাব কন্ট্রাক্টর রাস্তাটির ইটের সোলিং তুলে ইট ভেঙ্গে খোয়া করে রস্তার পাশে ফেলে রাখে এবং ভেকু দিয়ে রাস্তার বেড খুড়ে ফেলে রেখেছে। ঘুর্ণিঝড় রেমালের সময় প্রচন্ড বৃষ্টিতে পানি জমে খাল সাদৃশ্য অবস্থার অবতারণা হয়। ফলে এলাকার স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-,ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। অনেক ভ্যান চালকের ভ্যান বাড়ি থেকে বের করতে পারেনা। শত শত ঘের মালিকের ঘেরের মাছ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। মোটরসাইকেল চালকগণের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল বের করা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য উক্ত রাস্তার পূর্ব পাশে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএডিসির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশাল ‘পলি নেট হাউজ।’ এখানে চাষ করা হয়েছে পুঁইশাখ, ভেন্ডি, বরবটি, করলা, নানা জাতের সবজী চারা। উক্ত পলি নেট হাউজের মালিক সফল ও পদক প।রাপ্ত কৃষক নূর ইসলাম শেখ এ প্রতিবেদককে বলেন, এ রাস্তাটি নির্মাণ না করে সজিব নামক সাব কন্ট্রাক্টর শুধু বেড খুড়ে ফেলে রেখেছে প্রায় সাড়ে ৩ মাস। বর্ষা হলেই পানি জমে রাস্তাটি খালে পরিনত হয়। যে কারণে আমার উৎপাদিত বিভিন্ন সবজি চারা ও সবজি বাজারজাত করণ ও বিক্রি করা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিশুরা বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যেতে গিয়ে জলাবদ্ধ ও কর্দমাক্ত বেডে পড়ে পরণের পোশাকসহ বই-খাতা ভিজিয়ে বাসায় ফিরেছে। তবুও ঠিকাদার ও সাব কন্ট্রাক্টরের দেখা পাচ্ছনা এলাকাবাসী। মাসের পর মাস এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহায়ে চলেছে। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি দাঁড়ির পর বটতলা মোড় এলাকার ভুক্তভোগী লোকজন এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা আমাদের দুর্ভোগর কথা ও সাব কন্ট্রাক্টরের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কথা লিখিতভাবে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সাহাগীর হোসেন পাভেল, দিঘলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল ও দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ স্যারকে জানিয়েছি। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ ব্যাপারে কথা হয় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সাহাগীর হোসেন পাভেল এর সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ঠিকাদার ও সাব কন্ট্রাক্টর ও এলজিইডি খুলনা মিলে আমার নিজ ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের ২টি রাস্তার বেড সাড়ে ৩ মাস আগে খুঁড়ে রেখে ঘের মালিকসহ সাধারণ মানুষকে যে কষ্ট দিচ্ছে তা অমানবিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শোভ্য দেশে এরূপ অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চলতে পারেনা। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল এ প্রতিবেদককে জানান, মূল ঠিকাদার ও সার কন্ট্রাক্টরকে আমরা বার বার বলার পরও সে কর্ণপাত করছেনা। আমি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রেখেছে। সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত। আমাকে কেউ জানাইনি। এলাকাবাসী আমাকে জানানোর পর আমার যেটা করনীয় সেটা করেছি। আমি উপজেলা প্রকৌশলী ও এলজিইডি খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।

Share this post

PinIt
scroll to top