দক্ষ ও কৌশলী হোন চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকতে

30-2.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

প্রার্থীরা চাকরির আবেদনের পর মানবসম্পদ বিভাগ সাধারণত প্রাথমিক বাছাই বা শর্ট লিস্ট করে প্রার্থীর কয়েকটি বিষয়ের ওপর—
ক. সিভি এবং কভার লেটার : প্রার্থীর সিভি এবং কভার লেটারের মান, সঠিক তথ্য ও উপস্থাপনা।
খ. শিক্ষাগত যোগ্যতা : প্রার্থী যে পদে আবেদন করেছে সে পদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী তার শিক্ষাগত যোগ্যতা।
গ. কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা : প্রার্থীর পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা এবং প্রাসঙ্গিক
দক্ষতা।
ঘ. বিশেষ দক্ষতা : পদের জন্য প্রয়োজনীয় সফট স্কিল তার আছে কি না।

ঙ. প্রশংসাপত্র : পূর্ববর্তী নিয়োগদাতাদের দেওয়া সুপারিশ বা রেফারেন্স।

একাডেমিক যোগ্যতার বাইরে মানবসম্পদ বিভাগ এই কয়টি বিষয়ের ভিত্তিতে প্রার্থীদের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখে—
ক. প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা : প্রার্থী যে পদে আবেদন করেছে সে পদের পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা যা পদের জন্য প্রয়োজন।
খ. সফট স্কিল : যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধান ক্ষমতা, নেতৃত্বের গুণাবলি এবং দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতা।
গ. প্রজেক্ট ও ইন্টার্নশিপ : শিক্ষাকালীন সম্পন্ন করা প্রজেক্ট ও ইন্টার্নশিপ, যা প্রার্থীর প্রাসঙ্গিক দক্ষতার প্রমাণ দেয়।

ঘ. প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন : প্রার্থীর যদি অতিরিক্ত বিশেষ কোনো সার্টিফিকেট থাকে, যা সংশ্লিষ্ট পদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে এটি প্রার্থীকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।
ভাইভায় বেশির ভাগ প্রার্থীর বেলায় কিছু কমন ভুল দেখা যায়—
ক. ভাইভা বোর্ড সম্পর্কে বা পদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানাশোনা না থাকা।
খ. আত্মবিশ্বাসের অভাব বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস।
গ. পোশাক বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজে অসংগতি, যা প্রার্থীর অপেশাদার আচরণের ইঙ্গিত করে।

ঘ. জবাবে অস্পষ্টতা বা অযাচিত কথা বলা।
ঙ. প্রাথমিক সাক্ষাৎকারে বেতন নিয়ে অতিরিক্ত জিজ্ঞাসা বা অতিরিক্ত বেতন চাওয়া প্রার্থীর সম্পর্কে নিয়োগকর্তার মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সিভিতে প্রার্থীদের সাধারণত কিছু কমন ভুল দেখা যায়—
ক. সিভিতে অস্পষ্ট তথ্য বা অপ্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করে সিভি দীর্ঘ করা উচিত নয়। অনেকের সিভি তিন-চার পৃষ্ঠা, কিন্তু দরকারি তথ্য একদম শেষদিকে দেওয়া। এসব সিভি প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে ফেলে।

খ.স্ট্যান্ডার্ড সিভির ফরম্যাট অনুসরণ করে সিভি বানালে অযাচিত তথ্যাদি কম আসবে, সে ক্ষেত্রে সিভির গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে অপেশাদার ফরম্যাট সিভির পাঠযোগ্যতা কমিয়ে এর গ্রহণযোগ্যতাও কমিয়ে ফেলে। সিভির ধরন নিয়ে অনলাইনে প্রচুর তথ্য বা রিসোর্স আছে।

সরকারি ও বেসরকারি চাকরির মৌলিক পার্থক্যগুলো প্রার্থীরা বুঝতে পারলে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে। সরকারি চাকরির নিয়োগ সাধারণত দীর্ঘ এবং পরীক্ষানির্ভর, বেসরকারি চাকরিতে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করেই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ ছাড়া বেসরকারি চাকরিতে প্রযুক্তি ও পেশাদারি দক্ষতার গুরুত্ব বেশি থাকে। অন্যদিকে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসব দক্ষতার ওপর জোর দিতে হবে—
ক. প্রার্থীর যোগাযোগ দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থীর লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগ দক্ষতা কেমন, ইন্টারভিউ বোর্ড বিভিন্নভাবে এটি যাচাই করে।
খ. ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও সমস্যা সমাধানের কৌশলী জ্ঞান থাকতে হবে।
গ. প্রযুক্তিগত জ্ঞান যেমন—প্রগ্রামিং, ডাটা অ্যানালিটিকস—এসব বিষয়ে জানতে পারলে খুব ভালো হয়। পদ অনুযায়ী যে বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট, সেগুলো অবশ্যই নখদর্পণে থাকতে হবে।
ঘ. সময় ব্যবস্থাপনা, পড়াশোন, চাকরির প্রস্তুতি এমনকি চাকরিকালীনও জরুরি। সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঙ. প্রকল্প ব্যবস্থাপনার দক্ষতা থাকলে এটি প্রার্থীকে আরো অনেকখানি এগিয়ে রাখবে। প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট টুলস যেমন—ট্রেলো, আসানা এগুলোর ব্যবহার জানতে হবে।

চাকরির প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে করণীয়—
ক. আকর্ষণীয় ও প্রাসঙ্গিক সিভি প্রস্তুত করতে হবে, যা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন।
খ. লিংকডইন এবং অন্যান্য প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফরমে প্রফাইল হালনাগাদ ও সক্রিয় থাকতে হবে।
গ. নিয়মিতভাবে নতুন দক্ষতা অর্জন এবং পুরনো দক্ষতার উন্নয়ন করে নিজেকে আপডেট রাখুন।
ঘ. ইন্টারভিউর আগে সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তরগুলো প্রস্তুত রাখুন, প্রয়োজনে মক ইন্টারভিউ বা নমুনা মৌখিক পরীক্ষা দিন।

Share this post

PinIt
scroll to top