মে মাসের শেষ দিকে – ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে

10-10.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

চলতি তাপপ্রবাহ শেষে ২১ মের পর সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির বার্তাও দিয়েছে অধিদপ্তর, যা পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণ রূপ নিলে এর নাম হবে ‘রেমাল’। ওমানের দেওয়া এই আরবি নামের অর্থ ‘বালু’।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে মাসে বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত। এর পর সেটি ক্রমে শক্তি বাড়িয়ে ২৪ মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। পরদিন সন্ধ্যার পর তা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

১ এপ্রিল থেকে দেশে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ ছিল ৫ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে ২ মে বৃষ্টি হলেও দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তাপ প্রশমিত হয়েছে ৫ মের বৃষ্টির পর। নতুন করে তিন দিন ধরে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল ৩৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আগামী দু’দিন বিক্ষিপ্তভাবে দেশের পাঁচ বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইবে। ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন মডেল পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২১ মের পর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে, যেটি পরে লঘুচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এটির গতিপ্রকৃতি এখন স্পষ্ট নয়। লঘুচাপ সৃষ্টির পর বলা যাবে।

২০০৯ সালের ২৫ মে সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’। সেই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের ১৫তম বর্ষের সন্ধ্যাতেই ‘রেমাল’ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় মূলত বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ও শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হয় সাধারণত ৩০ মের পর থেকে ৭ জুনের মধ্যে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগের ঘূর্ণিঝড় মৌসুম মার্চ মাসে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়-নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপও সৃষ্টি হয়নি। তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু ২০ মের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই এটি খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চারটি প্রধান উপাদানের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনটির উপস্থিতি রয়েছে মধ্য ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে।

এই আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে জানান, ২০ থেকে ২৭ মের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হতে পারে। তবে কোথায়, কত গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে– তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনুমান করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে কোথাও এটি আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উপকূল এলাকায়। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত।

Share this post

PinIt
scroll to top