দেশের তথ্য ডেস্ক।।
প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পনাকারী সন্দেহে এক বাংলাদেশিকে আটক করেছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ। মালেশিয়ার গণমাধ্যম এনএনটি জানায়, বাংলাদেশি এই সিন্ডিকেট দুই বছর ধরে পাসপোর্ট টেম্পারিং এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। যে সমস্ত প্রবাসীদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের পাসপোর্ট এর প্রথম পাতা ছিঁড়ে তাতে পরির্তন করে মেয়াদ বাড়ানোর কাজ করত তারা।
এই সিন্ডিকেট জাল পাসপোর্ট করা জন্য জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ১৫০০ রিঙ্গিত নিয়ে থাকে।
জাল পাসপোর্টগুলি বিদেশি শ্রমিকদের মেডিক্যাল পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ সংস্থার (ফোমেমা) ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেছেন, “অপু ভাই” নামে পরিচিত ৩৮ বছর বয়সী মাস্টারমাইন্ডকে তার সঙ্গী, ৪০ বছর বয়সী ফিলিপিন নাগরিকের সঙ্গে আটক করা হয়। তারা যে পাসপোর্টটি বহন করছিল তাতে কোনো ভিসার মেয়াদ ছিল না। অবৈধ ভাবে তারা অতিরিক্ত অবস্থান করছিলেন।
গত শুক্রবার কাজাং প্রাঙ্গনে অভিযান চালিয়ে মালেয়শিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগটি ১টি কম্পিউটার এবং ২১১টি মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট জব্দ করেছে। এর মধ্যে ১৯৯টি বাংলাদেশের।
তিনি বলেন, অন্যদের মধ্যে ভারত, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ার পাসপোর্টও রয়েছে। জাল কাগজপত্র সহ ৩১টি প্রথম পাতা জাল নথি এবং ১৪৪টি ফোমেমা নথি, নথি জাল করার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং নগদ ১৬০০০ রিঙ্গিত জব্দ করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ।
“পাসপোর্টগুলি অজিরিনাল পাসপোর্ট হলেও শুধুমাত্র প্রথম পাতা জাল। যার কোনো নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নেই।
“তারা প্রথম পৃষ্ঠাটি ছিঁড়ে ফেলার জন্য এক ধরণের তেল ব্যবহার করে থাকে, মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখসহ নতুন পাতা প্রিন্ট করে কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে।
জুসোহ বলেন, “আমরা যে নগদ রিঙ্গিত বাজেয়াপ্ত করেছি তা খুব বেশি ছিল না। মাত্র ১৬০০০ রিঙ্গিত পরিমান অর্থ আমরা যব্দ করেছি।
তবে আমরা বিশ্বাস করি যে তাদের কাছে আরো বেশি থাকার কথা। আমাদের ধারণা বেশিরভাগ অর্থ অনলাইনে লেনদেন হচ্ছে। তিন সপ্তাহ ধরে সিন্ডিকেটেটিকে ধরতে তদন্ত করছে মালেয়শিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ।
তিনি আরো বলেন, বিভাগ তার তদন্তকে আরো বেশি ত্বরান্বিত করার জণ্য আগ্রহী রয়েছে এবং দেশের অন্যান্য সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্কের অপরাধ গুলি খতিয়ে দেখছে।
তিনি আরো জানান “আমরা কেবল কুয়ালালামপুর এবং ক্লাং উপত্যকার শুধু নয়, জোহরেও ঘটতে পারে এমন সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছি, কারণ সেখানেও জাল নথির ঘটনা ঘটেছে।”
রাসলিন বলেন, অভিবাসন আইন ১৯৫৬/৬৩ এর ৬৬ডি এবং পাসপোর্ট আইন ১৯৬৩ এর ধারা ১২(১)(এ) এর অধীনে তদন্তের সুবিধার্থে উভয় সন্দেহভাজনকে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন ডিপোতে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় না তাই তারা বেআইনি উপায়ে এখানে থেকে যাবার চেষ্টা করে। আমরা পাসপোর্ট নথি জাল করার সমস্যা মোকাবেলায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।’