চট্টগ্রামে উদ্বোধনের ৬ মাসেও চালু হয়নি এক্সপ্রেসওয়ে

7-8.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।।

চট্টগ্রামে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো যানবাহন চলাচল শুরু হয়নি। পতেঙ্গা সি-বিচ থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি ১৫.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। বহু প্রতীক্ষিত এই এক্সপ্রেসওয়ে কবে চালু করা হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না।

এদিকে চার হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার টাকা ব্যয়ে এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের এরই মধ্যে কয়েক দফায় সময়সীমা বেড়ে আগামী মাসে শেষ হচ্ছে।

প্রায় সাত বছর আগে হাতে নেওয়া চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক দফা বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের আওতায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১৪টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি র‌্যাম্প ৩৬২ মিটার দীর্ঘ এবং ৬.৮০ মিটার প্রস্থ হিসাবে ১৪টি র‌্যাম্পের মোট দৈর্ঘ্য ৫.৬৮ কিলোমিটার। মূল ফ্লাইওভার ও র‌্যাম্প মিলিয়ে মোট দৈর্ঘ্য ২০.৭৫ কিলোমিটার।

তবে এখনো একটি র‌্যাম্পেরও কাজ শেষ হয়নি।
এই মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। উদ্বোধনের ছয় মাস পরও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চালু করতে না পারার বিষয়ে কথা হয় সম্প্রতি যোগদান করা সিডিএ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি যোগদানের পর অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

কবে চালু হবে তা এখন বলছি না। কিছু কাজ বাকি আছে। তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক্সপ্রেসওয়েটি চালু করব।’
একই বিষয়ে ওই প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রকল্পের মূল উড়াল সেতুর ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু আলোকায়নের কাজ চলছে।

টোলপ্লাজার কাজ শেষ। আনুষঙ্গিক কাজ করে যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
এদিকে সম্প্রতি ওই এক্সপ্রেসওয়ের টোলের হারের অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তবে কবে নাগাদ যানবাহন চলাচল শুরু হবে এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। টোল আদায়ের জন্য থাকবে ১৪টি বুথ। সর্বশেষ গত মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি (সার্বিক কাজ) ৮৯ শতাংশ এবং প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮৪.৯০ শতাংশ।

র‌্যাম্পের কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, ১৪টি র‌্যাম্পের মধ্যে চারটির কাজ চলমান। এর মধ্যে আছে জিইসি মোড় এবং ফকিরহাট পয়েন্টে একটি করে, নিমতলা এলাকায় দুটি। র‌্যাম্পগুলোর নির্মাণকাজের অগ্রগতি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। পর্যায়ক্রমে অন্য র‌্যাম্পগুলো নির্মাণ করা হবে।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, চার লেনের এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার বাকি র‌্যাম্পগুলো নির্মাণ করা হবে টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে তিনটি, সিইপিজেডে দুটি, সিমেন্ট ক্রসিং মোড়ে একটি এবং কেইপিজেড এলাকায় দুটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, র‌্যাম্প ছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে এর সুফল মিলবে আংশিক। র‌্যাম্পগুলো চালু হলে পুরোপুরি সুফল মিলবে। বর্তমানে নগরের লালখানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেতে প্রধান সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের কারণে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লাগে। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকতে হয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে ওই পথ যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়া পতেঙ্গা সি-বিচ থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এই উড়াল সড়ক উদ্বোধন করেন।

Share this post

PinIt
scroll to top