৩৩ বছর কাটল, এখনো এক টাকায় চা বিক্রি করেন মহিউদ্দিন

cha-cha.webp

দেশের তথ্য ডেস্ক চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি :- শুরুটা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। আশপাশের দোকানে তখন এক টাকায় চা পাওয়া যেত। মহিউদ্দিনও তাঁর দোকানে চায়ের দাম রাখেন এক টাকা। এরপর কেটে গেছে ৩৩ বছর।

এখনো সেই এক টাকায়ই চা বিক্রি করে যাচ্ছেন মহিউদ্দিন।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুডা ইউনিয়নের বোয়ালমারী বাজারে মহিউদ্দিনের চায়ের দোকান। ৫৫ বছর বয়সী এই দোকানি বোয়ালমারী পশ্চিমপাড়া গ্রামের কিতব উদ্দিনের ছেলে। এলাকায় তাঁর দোকানটি মহির দোকান নামে পরিচিত।

ছিন্নমূল, ভিখারি, পথচারী, বৃদ্ধ ভ্যানচালক ও রিকশাওয়ালারা ওই এলাকায় গেলে তাঁর দোকানে একবার যাবেই।
গত বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে মহিউদ্দিনের সঙ্গে তাঁর দোকানে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এ সময় মহি জানান, বাড়ির এটা-সেটা বিক্রি করে চায়ের দোকানটি দিয়েছিলেন তিনি। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা থেকে মূলত এখনো এক টাকায় মানুষকে চা বিক্রি করে যাচ্ছেন।

তবে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তিনি জানান, এরই মধ্যে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে বিএ পাস করিয়েছেন। মহি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা নিম্ন আয়ের মানুষ। খেটে খাওয়া এসব মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। গ্রামের সেই শ্রেণির মানুষ আমার কাছে এসে চা ও পান খায়।

তবে পানের কোনো নির্ধারিত মূল্য নেই, কম-বেশি নেওয়া হয়।
ওই গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, গ্রামের প্রতিটি চায়ের দোকানে পাঁচ টাকার নিচে চা ও পান বিক্রি করা হয় না। তাই দাম বেশি হওয়ায় এই দোকানে মানুষ ভিড় জমায় চা ও পান খাওয়ার জন্য। এক টাকায় চা ও অন্য দোকানের চেয়ে কম দামে পান খেতে আসা ভিক্ষুক মরিয়ম বলেন, ‘আমরা সারা দিন অন্যের কাছে হাত পেতে চলি। চা ও পান খাওয়ার ক্ষমতা নাই। এই দোকান এক টাকায় চা ও পান দিচ্ছে। তাই এই এলাকায় এলে এই দোকান থেকে চা ও পান খেয়ে যাই।’

এ বিষয়ে স্থানীয় তালসারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, টানা ৩৩ বছর ধরে মানুষকে এক টাকায় চা খাওয়াচ্ছেন মহি—এটি এই সময়ে একটি বড় ঘটনা। সমাজে এই ধরনের মানুষ বিরল।

Share this post

PinIt
scroll to top