জামালপুরে রেলসেতুতে লোহার স্লিপার ক্লিপের বদলে বাঁশ!

rail-20240407120038.jpg

দেশের তথ্য ডেস্ক।। দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রেলপথের জামালপুরের ঝিনাই রেলওয়ে সেতুতে রেললাইনের লোহার স্লিপার ক্লিপের পরিবর্তে বাঁশের টুকরো লাগানো হয়েছে। বেশিরভাগ লাইনের স্লিপারও নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় প্রতিদিন তিন জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার কম্পপুর এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর প্রায় ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুতে ৩১৮টি স্লিপার রয়েছে। সেতুটির ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর ওপর স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর জন্য লোহার ক্লিপের বদলে বাঁশের ছোট ছোট টুকরো লাগানো হয়েছে। আবার কোথাও বাঁশের ক্লিপ নেই। নষ্ট হয়ে গেছে কাঠের স্লিপারও। সেতুতে স্লিপার রয়েছে ৩১৮টি। এর মধ্যে বেশিরভাগ স্লিপারগুলো নড়বড়ে। ফালি বসিয়ে পেরেক ঠুকে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিছু কিছু জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে।

জামালপুর সদর উপজেলার কম্পপুর ও চরপলিশা এলাকার স্থানীয়রা জানান, এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ৯টি ট্রেন যাতায়াত করে। আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে তিস্তা এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র ট্রেনের গতি বেশি থাকে। ওই সেতু ব্রিটিশ আমলে তৈরি, কাঠের স্লিপার তেমন একটা পাল্টানো হয়নি। বেশ কিছু আগের স্লিপার রয়েছে। যেগুলো এখন একবারে নষ্ট হয়ে গেছে। পুরাতন কাঠের স্লিপারে লোহার ক্লিপ নরম হয়ে গেছে। এ সুযোগের কিছু লোকজন লোহার ক্লিপ খুলে নিয়েছে। বর্তমানে লোহার ক্লিপ খুলে নেওয়ার জায়গায় বাঁশের ছোট টুকরো ঢুকানো হয়েছে। প্রতিদিনই রেলওয়ে বিভাগের লোকজন এই সেতু দেখতে আসেন। তার কখন এগুলো পরিবর্তন করার কথা বলে না।

চরপলিশা এলাকার কৃষক আজহার আলী বলেন, আমি এখানে আবাদ করি। বেশিরভাগ সময় ব্রিজের পাশেই থাকি। মানুষজন ঘুরতে এসে লোহার ক্লিপ খুলে নিয়ে গেছে। আমি একবার ধরেছিলাম একজনকে ক্লিপ খোলার সময়। ব্রিজের বেশি জায়গায় লোহার ক্লিপ লাগানো তবে ওই জায়গায় বাঁশের খুঁটি লাগনো হয়েছে। এক মাস আগে সেনাবাহিনী রেললাইন পরিদর্শনে এসেছিল। লাইনের লোকজনকে বাঁশ সরিয়ে ফেলে লোহার স্লিপার ক্লিপ লাগাতে বলেছে।

একাই এলাকার কৃষক সোলায়মান হোসেন বলেন, লাইনের বেশিরভাগ ক্লিপ নেই। কিছু খারাপ লোক ঘুরতে এসে ক্লিপ খুলে নিয়ে গেছে সেই জায়গাগুলোতে পরে আর লোহার ক্লিপ লাগানো হয়নি। বাঁশের ক্লিপ লাগিয়েছে।

ওই রেলওয়ে লাইনের দায়িত্বরত পিডব্লিউআই (পারমানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টর) আবু সাঈদ বলেন, রেলসেতুটির অনেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে, বেশ কিছু ক্লিপও নেই। আমরা ঈদের আগেই সবগুলো ঠিক করব।

জামালপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি কিছুদিন আগেই এই জায়গায় এসেছি। রেলওয়ে সেতুটি এখনো আমি দেখিনি কি অবস্থায় রয়েছে। সেতুটি দেখে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

Share this post

PinIt
scroll to top