বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক প্রদত্ত মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে কেএমপি’র কমিশনারঃ

.jpg
আজ ২৫ মার্চ সোমবার দুপুর ১২:৩০ ঘটিকায় কেএমপি হেডকোয়াটার্সের সম্মেলন কক্ষে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
আজকের মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। অতঃপর বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের সন্তান যারা কৃতিত্বের সাথে ভাল ফলাফল করেছেন তাদেরকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে এসএসসি’তে সকল বিষয়ে A+ প্রাপ্ত ফাতেমা নাইস মেঘা; তাবাচ্ছুম আফরিন; আফরিন মিম; সানজিদা ইসলাম সিলমী; নিগার নেহেরুমা; জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা; জয় বিশ্বাস; সায়মা ইসলাম; মোঃ জিহাদ গাজী; শাহরুখ তরফদার; মোঃ মোজাফফর হোসেন রাজিব; হুমায়রা তাসনিম ঋতু; আব্দুল্লাহ আল ফারদিন; অর্ণি মিস্ত্রি; অংকন হালদার; মোসাঃ আসরোজা আবেদীন কথা; রুবিনা আক্তার মিতু; সরদার জান্নাতুল ফাতেমা অহনা; মোঃ এম.কে.আলম; লাইমা রহমান; শাহরিয়ার সামীম জয়; মোঃ রিদানুল ইসলাম; মোসাঃ কানিজ ফাতেমা; মোঃ মেহেদী হাসান; সুমাইয়া আক্তার; আবু জার গিফারী; উর্মি আক্তার; জান্নাতুল ফেরদৌস হৃদি; মোসাঃ নুসরাত জাহান; রাখি পূর্ণিমা রায়; তানজিনা তাবাসসুম কনা; সামিয়া ইয়াসমিন; মোঃ রাকিবুল হাসান রাতুল; আল মাহমুদা; জান্নাতুল ফেরদৌস এবং ২০২২ সালে এইচএসসি’তে সকল বিষয়ে A+ প্রাপ্ত ফাহমিদা তাসনিম মলি; মোঃ মাহফুজুর রহমান; নুসরাত জাহান; বঙ্কিমচন্দ্র সরকার; মোসা সুমাইয়া আক্তার ইভা; অমিত কুমার পালদের’কে ক্রেস্ট, সম্মানী অর্থ এবং সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।May be an image of 16 people, people smiling and text
উক্ত মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় বলেন, “আজকের এই দিনটি পুলিশ সদস্যদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যারা আজকে ক্রেস্ট, সম্মানী অর্থ এবং সম্মাননাপত্র পেয়েছে প্রত্যেকটি সন্তানই বলেছে তাদের বাবার পেশা নিয়ে গর্বিত।May be an image of 5 people and text আমাদের মনে রাখতে হবে, এই দেশটি এক সময় পরাধীনতার নাগপাশে বন্দী ছিল। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙ্গালীদের এই ভূখন্ডে আর্য, পাঠান, মোঘল, পর্তুগিজ, ইংরেজরা শাসন করেছে আমরা শোষিত হয়েছি। এই ভূখণ্ডের কুলো বধূ ও গ্রাম বাংলার সহজ সরল মানুষের প্রার্থনা ছিল এই ভূখণ্ডে এমন একজন মানুষ দাও যিনি এই ভূখণ্ডের মানুষকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিতে পারে। সেই কুলো বধুদের স্বপ্ন সফল হয়েছিল ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ। গোপালগঞ্জ জেলার টুংগীপাড়ার নিভৃত পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতিকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন এবং সার্বভৌম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি ১৯৪৭, ১৯৪৯, ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ সালের আন্দোলন সংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের ০৭ ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রু সৈন্যদের মোকাবেলা করার জন্য তিনি এই নির্দেশনা দিয়েছিলেন। একটি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন করার জন্য নিউক্লিয়াস হিসেবে কাজ করেছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই ভাষণ। তার দিক নিদের্শনায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে দেশ প্রেমিক পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য তার পরিবার-পরিজন নৃশংসভাবে ১৫ই আগস্ট ঘাতকের গুলিতে শহীদ হয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যসহ ত্রিশ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো দুই লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।”May be an image of 5 people, dais and text
তিনি আরো বলেন, ‘এদেশে এক সময় অধিকাংশ মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হতো। মেয়েরা সংসারে নির্যাতিত হত। সে সময় স্কুল, কলেজ, স্বাস্থ্যসেবা ছিল না। এই স্বাধীনতার সুবাধে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশেটিকে অর্থনীতি পুনর্গঠনের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথমে সুদূর প্রসারী চিন্তা সহ গ্রাম বাংলার মানুষকে গণশিক্ষায় শিক্ষিত করার পরিকল্পনা করেন। নারী-পুরুষ সকলকে শিক্ষা ব্যবস্থা সংবিধানে বাধ্যতামূলক করেছে। গরিব মানুষের সন্তানেরা যাতে পড়াশোনা করতে পারেন সেই লক্ষ্যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি ঘোষণা করেন বিধায় আমি বা তোমার অভিভাবকগণ শিক্ষা গ্রহণ করে চাকরি করতে পারছি। আমাদের বাবারা নিজের চোখের পানি মুছে, কম খেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য কম বোধ করে পরিবার, স্ত্রী, সন্তানকে বড় করছে। সুতারাং তোমাদের জ্ঞান শুধু পাঠ্য বইয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে হবে। ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে মোবাইলের ব্যবহার বাড়ছে। মোবাইল দিয়ে অনেক কিছু জানার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ডিজিটাল ডিভাইস অবশ্যই ব্যবহার করব। কিন্তু এর মধ্যে হারিয়ে যাবো না। সার্টিফিকেট অর্জন করাই প্রকৃত শিক্ষা নয়। আমাদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। প্রকৃত শিক্ষা সৎ ও নিষ্ঠার সাথে জীবন যাপন করতে শেখায়, বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিখায়। বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবন থেকে সংগ্রাম শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত সে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। আজ তাঁরই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশকে উন্নয়ন করে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। আজ অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি এমন কোন সেক্টর নাই; যে সেক্টরে এদেশে উন্নয়ন হয়নি। দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগুচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জীবনে ব্যর্থতা আসতে পারে। সব কাজে সফলতা আসবে এমন নয়। এজন্য দমে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সবার মাঝে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। নিজেদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে, জীবনের যে কোনো পর্যায়ে সাফল্য আসতে পারে। আমরা ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই না, আমরা সফল হতে চাই। আমরা অন্যের কাছে অনুপ্রেরণা হবো, যাতে অন্যরা আমাদের দেখে শিখতে পারে।’ সর্বশেষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে দেশ প্রেমে নিজেকে আত্মনিয়োগ করা প্রত্যয় ব্যক্ত করে বক্তব্যে সমাপ্ত করেন।
এ সময় বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) জনাব সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) জনাব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত); বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) জনাব রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত); ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) জনাব এম.এম শাকিলুজ্জামান (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত); ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি) জনাব শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু; এবং অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) জনাব মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন্ হাছান, পিপিএম-সেবা (বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত)-সহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের তথ্য ডেস্ক

Share this post

PinIt
scroll to top