ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখার শাস্তি

ramadan-karim05-20240324120737.jpg

রমজান মাসের রোজা, সুস্থ-সবল ও প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে সেই কথা বলেছেন। শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া রোজা ভাঙার বিধান নেই। যদি কেউ উদাসীনতার কারণে রোজা ভাঙে তবে গুরুতর গুনাহের অংশীদার হবে।রোজা না রাখার শাস্তি

আবু উমামা রা. বলেন, আমি নবীজি সা.-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এমন সময় দুজন ব্যক্তি এসে আমার দুবাহু ধরে দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গেলেন। তারপর তারা বললেন, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বললেন, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তখন আমি ওঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শুনতে পাই।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের আওয়াজ? তারা বললেন, জাহান্নামিদের আওয়াজ। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে গেলেন, যাদেরকে পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ক্ষতবিক্ষত, তা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার, যারা (অকারণেরমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ভাঙতো।’ (সহিহ ইবনে খুযাইমা : ১৫০৯)

উদাসীনতায় পার রমজান পার

অথচ আমরা অনেকেই শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়াই হেলাফেলায় রোজা ভেঙে ফেলি। যা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ গুনাহের কাজ। বেরোজাদারের জন্য রমজান মাসে রেস্তোরাঁ ও রাস্তার পাশের খাবারের দোকানগুলো পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। তারা সেখানে বাহারি পদের খাবার আর চা, সিগারেটের আড্ডায় মেতে ওঠে।

উদাসীনতায় পার করে দেয় রমজান, বঞ্চিত হয় অঢেল ফজিলত থেকে। মানুষের লজ্জায় তারা পর্দার আড়ালে খাবার খায়। কিন্তু যিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রাজাধিরাজ, বিচার দিনের অধিপতি, তার ভয় তাদের অন্তরে থাকে না। তারা ভুলে যায় আল্লাহ তায়ালা সকল বিষয়ে অবগত; হোক তা পর্দার আড়ালে কিংবা প্রকাশ্যে। মহান আল্লাহ আমাদের সব বিষয় সম্পর্কে অবগত।

কোরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে এবং যা কিছু তা থেকে বের হয় এবং আকাশ থেকে যা কিছু বর্ষিত হয়, আকাশে যা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন এবং তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে দ্রষ্টা।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত : ৪)রমজানের ফজিলত পাওয়া যাবে না আর কখনো

নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাদের কঠিন আজাবে পাকড়াও করবেন, যারা তার বিধান লঙ্ঘন করে। শেষ বিচারের দিন তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য আফসোস করবে এবং পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসতে চাইবে; কিন্তু তখন আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। রমজানের রোজা ও ইবাদাতের এত ফজিলত; যা ছুটে গেলে কোনোভাবেই তা পূরণ করা সম্ভব নয়।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত প্রয়োজন ও রোগ ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভেঙে ফেলল, তার সারা জীবনের রোজা দ্বারাও এই কাজা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন রোজা পালন করে।’ (সহিহ বুখারি : ১৮১১)

হাদিসে এসেছে, যারা রমজানের রোজা পেয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে এবং নিজের গুনাহসমূহ মাফ করাতে পারল না তারা দুর্ভাগা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের এ পবিত্র মাসে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারল না, সে বড়ই দুর্ভাগা। (ইবনে হিব্বান)

দেশের তথ্য ডেস্ক 

Share this post

PinIt
scroll to top