Dhaka 1:44 pm, Sunday, 6 July 2025

খুলনায় ১১ দিনে নদী থেকে ৩ লাশ উদ্ধার

 

গত কয়েকদিন ধরে খুলনার নদ-নদী থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার ঘটনায় আতংক বাড়ছে। গত ১১ দিনের ব্যবধানে খুলনার দু’টি নদী এবং একটি খাল হতে অজ্ঞাতনামা তিনজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দু’জন পুরুষ এবং একজন নারী।

মরদেহগুলোর শরীর এবং হাতের আঙ্গুলের টিস্যু পচে যাওয়ায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। পরিচয় না থাকায় অধিকাংশ মরদেহগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ মে খুলনার ৬ নং মাছ ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ। তার শরীরে নীল রংয়ের গেঞ্জি এবং কালো রংয়ের প্যান্ট ছিল। ওই ব্যক্তির মুুখ এবং হাতের আঙ্গুলের টিস্যু পচে যাওয়ার কারণে সিআইডি এবং পিবিআইয়ের বিশেষজ্ঞ টিম তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। পরে তার শরীর থেকে ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। পরদিন সুরাতহাল রিপোর্ট এবং ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়।

গত ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালে একটি ডালে বেধে ছিল এক নারীর মরদেহ। এলাকাবাসীর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুলে দাফন করা হয়।

সর্বশেষ ৯ জুন বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রূপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়ন সংলগ্ন আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাস নালীতে গভীর ক্ষতের চিহ্ন ছিল। তার পরনে ছিল নীল রংয়ের প্যান্ট এবং তার শরীরের ওপরের অংশে কোন কাপড় ছিল না। মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়।

রূপসা নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের বলেন, মঙ্গলবার (১০ জুন) দুুপুর পর্যন্ত তার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। আশপাশের থানায় ছবি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এটি একটি হত্যাকান্ড, এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।

খুলনা সদর নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জ বাবুল আক্তার বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো হত্যাকান্ড বা অন্যকিছু কি না তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। শরীর এবং হাতের আঙ্গুলে পচন থাকায় লাশগুলোর ব্যক্তিগত পরিচিতি সিআইডি ও পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা উদ্ধার করতে পারেনি। ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া লাশগুলো হত্যাকা-ের শিকার কি না অন্যকিছু তা বলা সম্ভব নয়।

জানতে চাইলে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, খুলনাসহ সারাদেশে গুম, খুনের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। কাজেই মাঠ পর্যায়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা বাড়ানো দরকার।

 

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় ইমাম হোসাইন (আঃ)’র পবিত্র আশুরা পালিত

খুলনায় ১১ দিনে নদী থেকে ৩ লাশ উদ্ধার

প্রকাশঃ 01:02:11 pm, Tuesday, 10 June 2025

 

গত কয়েকদিন ধরে খুলনার নদ-নদী থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার ঘটনায় আতংক বাড়ছে। গত ১১ দিনের ব্যবধানে খুলনার দু’টি নদী এবং একটি খাল হতে অজ্ঞাতনামা তিনজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দু’জন পুরুষ এবং একজন নারী।

মরদেহগুলোর শরীর এবং হাতের আঙ্গুলের টিস্যু পচে যাওয়ায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। পরিচয় না থাকায় অধিকাংশ মরদেহগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ মে খুলনার ৬ নং মাছ ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ। তার শরীরে নীল রংয়ের গেঞ্জি এবং কালো রংয়ের প্যান্ট ছিল। ওই ব্যক্তির মুুখ এবং হাতের আঙ্গুলের টিস্যু পচে যাওয়ার কারণে সিআইডি এবং পিবিআইয়ের বিশেষজ্ঞ টিম তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। পরে তার শরীর থেকে ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। পরদিন সুরাতহাল রিপোর্ট এবং ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়।

গত ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালে একটি ডালে বেধে ছিল এক নারীর মরদেহ। এলাকাবাসীর তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুলে দাফন করা হয়।

সর্বশেষ ৯ জুন বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রূপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়ন সংলগ্ন আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাস নালীতে গভীর ক্ষতের চিহ্ন ছিল। তার পরনে ছিল নীল রংয়ের প্যান্ট এবং তার শরীরের ওপরের অংশে কোন কাপড় ছিল না। মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়।

রূপসা নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের বলেন, মঙ্গলবার (১০ জুন) দুুপুর পর্যন্ত তার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। আশপাশের থানায় ছবি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এটি একটি হত্যাকান্ড, এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।

খুলনা সদর নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জ বাবুল আক্তার বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো হত্যাকান্ড বা অন্যকিছু কি না তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। শরীর এবং হাতের আঙ্গুলে পচন থাকায় লাশগুলোর ব্যক্তিগত পরিচিতি সিআইডি ও পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা উদ্ধার করতে পারেনি। ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া লাশগুলো হত্যাকা-ের শিকার কি না অন্যকিছু তা বলা সম্ভব নয়।

জানতে চাইলে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, খুলনাসহ সারাদেশে গুম, খুনের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। কাজেই মাঠ পর্যায়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা বাড়ানো দরকার।