Dhaka 3:07 pm, Sunday, 6 July 2025

কুষ্টিয়ায় বদলির পরেও দিনরাত সাতক্ষীরা অফিসে, নথি গায়েবের অভিযোগ

 

সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলামকে কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়ায় বদলি করা হয়েছে। তারপরেও বিভিন্ন ওজুহাত দেখিয়ে দিনরাত পড়ে আছেন সাতক্ষীরা অফিসে।

উনার বিরুদ্ধে প্রায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার নয়-ছয়ের অভিযোগসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সে সব কিছুর নথি ও প্রমাণ গায়েবে তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। এমন খবর চাউর হয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মহলে।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আশফিকুন নাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

বদলির পরেও তিনি প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত সাতক্ষীরায় অফিস করছেন। এমনকি ছুটির দিনেও তাকে অফিসে দেখা গেছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মো. শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন ওজুহাত দেখায়ে আরও বেশ কিছু দিন সাতক্ষীরা অফিসে থাকার চেষ্টা করছেন, যাতে তার বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের নথি ও প্রমাণ গায়েবসহ বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতে পারেন।

সম্প্রতি সময়ে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার নয়-ছয়ের অভিযোগসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্রিকা, নিউজপোর্টাল ও বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মো. শহিদুল ইসলামের ব্যাপক টেন্ডারবাজি আর অনিয়মের কারণে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা কার্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছিল। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম কোন প্রকার নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই বিগত সরকারের আমলে খেয়াল খুশিমত নিজের পছন্দের কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছেন। কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তার নিজের ও আত্মীয় স্বজনের প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার নির্বাচনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। যে কারণে সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুই শত কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আরও জানা যায়, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল ধন সম্পদ গড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। যশোরের নিউ মার্কেট এলাকায় ৫তলা বাড়িসহ ৮/১০টি প্লট এবং কয়েক বিঘা জমি রয়েছে তার যশোর শহরে। তাছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি ও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নামে বেনামে সম্পত্তি।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে তার পিতার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে না থাকলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেন। তার পিতার গেজেট প্রকাশ হয় ২০১৬ সালে। তার একাডেমিক সার্টিফিকেট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন।

এ বিষয়ে জানতে শহিদুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় ইমাম হোসাইন (আঃ)’র পবিত্র আশুরা পালিত

কুষ্টিয়ায় বদলির পরেও দিনরাত সাতক্ষীরা অফিসে, নথি গায়েবের অভিযোগ

প্রকাশঃ 04:54:40 pm, Friday, 21 February 2025

 

সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলামকে কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়ায় বদলি করা হয়েছে। তারপরেও বিভিন্ন ওজুহাত দেখিয়ে দিনরাত পড়ে আছেন সাতক্ষীরা অফিসে।

উনার বিরুদ্ধে প্রায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার নয়-ছয়ের অভিযোগসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সে সব কিছুর নথি ও প্রমাণ গায়েবে তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। এমন খবর চাউর হয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মহলে।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আশফিকুন নাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

বদলির পরেও তিনি প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত সাতক্ষীরায় অফিস করছেন। এমনকি ছুটির দিনেও তাকে অফিসে দেখা গেছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মো. শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন ওজুহাত দেখায়ে আরও বেশ কিছু দিন সাতক্ষীরা অফিসে থাকার চেষ্টা করছেন, যাতে তার বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের নথি ও প্রমাণ গায়েবসহ বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতে পারেন।

সম্প্রতি সময়ে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুইশ কোটি টাকার টেন্ডার নয়-ছয়ের অভিযোগসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্রিকা, নিউজপোর্টাল ও বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মো. শহিদুল ইসলামের ব্যাপক টেন্ডারবাজি আর অনিয়মের কারণে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা কার্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছিল। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম কোন প্রকার নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই বিগত সরকারের আমলে খেয়াল খুশিমত নিজের পছন্দের কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছেন। কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তার নিজের ও আত্মীয় স্বজনের প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার নির্বাচনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। যে কারণে সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুই শত কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আরও জানা যায়, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল ধন সম্পদ গড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। যশোরের নিউ মার্কেট এলাকায় ৫তলা বাড়িসহ ৮/১০টি প্লট এবং কয়েক বিঘা জমি রয়েছে তার যশোর শহরে। তাছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি ও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নামে বেনামে সম্পত্তি।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে তার পিতার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে না থাকলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেন। তার পিতার গেজেট প্রকাশ হয় ২০১৬ সালে। তার একাডেমিক সার্টিফিকেট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন।

এ বিষয়ে জানতে শহিদুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।