কয়রা প্রতিনিধিঃ অরবিন্দ কুমার মণ্ডল
খুলনার কয়রায় জাতীয় যুব দিবসে শপথ বাক্য পাঠ করানোর সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের তোপের মুখে পড়েন কয়রার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
১ নভেম্বর শুক্রবার ১০টায় উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে র্যালি উত্তর আলোচনা সভায় এই ঘটেনা ঘটে।
জানা গেছে, “দক্ষ যুব গড়বে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কয়রা উপজেলা যুব অধিদপ্তরের আয়োজনে জাতীয় যুব দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভায় শপথ বাক্য পাঠ করার জন্য যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাইক্রোফোন ধরলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা প্রতিনিধি গোলাম রাব্বানী এর বিরোধীতা করেন।
এসময় তিনি যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন (৪ আগষ্ট) আপনি আপনার নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা করেছেন। ফেসবুকের টাইম লাইন “জনে জনে খবর দে, এক দফারে কবর দে” এবং “রাতের মধ্যেই সমন্বয়করা ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে, ওদের যেতে দিবেন না। অনেক হিসাব বাকি আছে”।
এ সমস্ত পোস্ট দেন। আপনি সরাসরি ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরোধীতা করেছেন। ছাত্র জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করেছেন। আপনি আজ শপথ বাক্য পড়াতে পারবেন না। এসময় মিলনায়তনে উপস্থিত লোকজন আলোচনা সভায় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা জি এম মাওলা বক্সকে শপথ বাক্য পাঠ করতে বলেন এবং তিনি শপথ বাক্য পাঠ করান।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কয়রা উপজেলা কমান্ডের আহবায়ক জি এম মাওলা বক্স, কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুল আলম, দায়িত্বরত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হাসান ফেরদৌস, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন রাতুল, গোলাম রব্বানী, মহাসিন আলম, কয়রা উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি সামিউল হক, সফল যুব উদ্যোক্তা মোঃ এনামুল হক ও মোছাঃ আসমা খাতুন প্রমুখ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা প্রতিনিধি গোলাম রাব্বানী বলেন, কয়রার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধীতা করেছেন। এবং আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য কয়রা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় নিবন্ধিত যুব সংঘঠনের যুবকদের নিয়ে মিটিং করেছেন। আজ যুব দিবসে তিনি শপথ বাক্য পাঠ করালে শহীদদের সাথে বেইমানী করা হবে। এজন্য শপথ বাক্য পাঠের সময় বিরোধীতা করেছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কয়রা উপজেলা কমান্ডের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা জি এম মাওলা বক্স বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের দোসররা এখনো বিভিন্ন দপ্তরে সক্রিয় রয়েছে। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিগত সময়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন ভাবে বিরোধীতা করেছেন। তাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলার প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী এসব কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রতিবাদ করেন এবং শপথ বাক্য পাঠ করাতে বাধা দেন। পরবর্তীতে সভায় উপস্থিত লোকজনের সম্মতিক্রমে আমি শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছিলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী আমাকে শপথ বাক্য পাঠ করাতে বাধা দিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলা বক্স শপথ বাক্য পাঠ করান। তবে ছাত্র আন্দোলনের সময় বিরোধীতা করে ফেসবুক পোস্ট ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সম্মানী আত্মসাতের ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও কয়রা উপজেলা নিবার্হী অফিসার রুলি বিশ্বাস বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে বক্তব্য শেষে চলে আসি। বিষয়টি আমার জানা নেই।