কয়রা প্রতিনিধিঃ অরবিন্দ কুমার মণ্ডল
অধ্যাপনার পাশাপাশি কবি ও লেখক হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেন কয়রার কৃতি সন্তান প্রভাষক শাহানূর আলম।
প্রভাষক শাহানূর আলমের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো। নাম- প্রভাষক শেখ শাহানূর আলম। বাবার নাম শেখ মতিউর রহমান, মায়ের নাম আনঞ্জুয়ারা বেগম। তাঁর সহধর্মিণী মরিয়ম খাতুন এবং একমাত্র সন্তান তাসনিম আবিদ ত্বোহা। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড়। ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী তাঁর বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তিনি ১৯৮৫ সালের ১লা ডিসেম্বর কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের বতুল বাজার গ্রামে তাঁর নানা বাড়ীতে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি কয়রা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৩নং কয়রা গ্রামে নিজ বাড়ীতে বসবাস করেন।
লেখাপড়ায় হাতেখড়ি বতুল বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০১ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন কয়রা শাকবাড়ীয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় থেকে। বি এসএস ডিগ্রী লাভ করেন সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজ পিরোজপুর থেকে। ২০০৮ সালে এমএসএস ডিগ্রী লাভ করেন দৌলতপুর খুলনার বিএল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
লেখাপড়া জীবন শেষে বর্তমানে তিনি কয়রা শাকবাড়ীয়া স্কুল এন্ড কলেজে প্রভাষক পদে কর্মরত আছেন। তিনি খুলনা TTI ট্রেনিং সেন্টার থেকে ICT বিষয়ে ট্রেনিং গ্রহণ করেন। তিনি ICT গবেষণার পাশাপাশি একজন ICT বিষয়ে বইও লিখেছেন। শৈশব জীবনে তিনি দারীদ্র্যতার মধ্য দিয়ে পড়ালেখা শেষ করেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছড়া ও কবিতা লিখতেন। তাঁর প্রথম কবিতা “বাংলার কৃষক”। যে কবিতার মধ্যে কৃষকদের বাস্তব জীবনের মর্মান্তিক দূর্দশার চিত্র ফুটে উঠে।তাঁর লেখা কবিতাটি নিম্নরূপ ঃ
বাংলার কৃষক
শাহানূর আলম
সহজ সরল নামটি তাঁদের
একটি নামেই পরিচয়-
তাঁদের জন্য বেঁচে আছি
আমরা সবাই এই দুনিয়ায়।।
ছিন্ন বসনে চলে তাঁরা
আধা অন্ন পেটে-
কাজটি তবু করে তাঁরা
নিজ নাহি পরের মাঠে।
কন্ঠ তাঁদের গেয়ে ওঠে
দুঃখ-বেদনার ছলে-
মস্তক হতে শিশির ধারা
পড়ে চরণ তলে।
বীজটি রোপে ভূমি হতে
প্রভুর নাম দিয়ে-
পায় না হিসাব সঠিকভাবে
সেই না ফসল নিয়ে।
দেশটি আমার অতি গরীব
তবু আছে বেঁচে-
কৃষক হলো দেশের প্রাণ
জীবন দিলো শেষে।
সেই লেখালেখির নেশায় আজ তাঁকে দিয়েছে নতুন এক পরিচয়। সন্ধান প্রকাশনী তাঁর লেখা ১০টি ছড়া ও কবিতা নিয়ে দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করতে যাচ্ছেন (বিশ্বাসের ঘরে ছলনার দেওয়াল ও রক্তে বিজয়)। আগামী ২০২৫ সালে ঢাকার বইমেলায় কাব্যগ্রন্থ দুটি প্রদর্শিত হবে। প্রকাশনী কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শাহনূর আলম এর লেখা তারা দেখছেন তাঁর লেখায় আলাদা একধরনের যাদু রয়েছে। শাহানূর আলমের লেখায় তারুণ্যের হৃদয়ে দারুণ ভাবে স্থান পাবে বলে মন্তব্য করেন। তারা আরো বলেন, নব্য লেখক হিসেবে শাহানূর আলমের ১০টি ছড়া ও কবিতা, ২টি কাব্যগ্রন্থে ২৫শে’র বইমেলায় তারা প্রদর্শিত করবেন এবং লেখক সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করবেন।
প্রভাষক শাহানূর আলম বলেন, তাঁর লেখা ছড়া ও কবিতা প্রকাশনীকে আকৃষ্ট করছে ও ২০২৫ সালের বইমেলায় আমার লেখা ছড়া ও কবিতা গুলো ২টি কাব্যগ্রন্থে প্রকাশ পাচ্ছে, খবরটি জানতে পেরে আমি অনেক খুশি ও আনন্দিত। তাই তিনি সন্ধান প্রকাশনীকে তাঁর লেখা প্রকাশ, লেখক সনদ ও ক্রেস্ট প্রদানের সিদ্ধান্তে প্রকাশনী কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।