দেশের তথ্য ডেস্কঃ
খুলনা বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় অফিস ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিধি বহির্ভূতভাবে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পালের বিরুদ্ধে। এছাড়া অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতায় গড়েছেন নিজ রাজত্ব। প্রায় এগারো বছর একই স্থানে চাকুরির সুবাদে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট বলে রয়েছে একাধিক অভিযোগ।
একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল খুলনায় সুফল প্রকল্পের আওতায় খুলনার বয়রাতে ৬,৬০,০০,০০০/- (ছয় কোটি ষাট লক্ষ) টাকা ব্যয়ে অফিস ভবন নির্মাণ করার জন্য ইজিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করেন (দরপত্র আইডি নং-৯৯৯৬০৬)। গত ৩০/০৭/২০২৪ইং তারিখে দরপত্রে মোট ৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেন এবং তাতে সমঝোতার মাধ্যমে অফিসিয়াল গোপন রেট সংগ্রহকারী ৫টি প্রতিষ্ঠান একই দর দাখিল করেন এবং গোপন রেট সংগ্রহ করিতে না পারা ৩টি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল হয়ে যায়। এদিকে ডিএফও নিজস্ব প্রতিষ্ঠানকে সমঝোতার মাধ্যমে কাজটি পাইয়ে দেবার জন্য পিপিআর বহির্ভূত শর্ত আরোপ করেন। কিন্তু কোন নির্মাণ কাজের জন্য পিপিআর অনুসারে সর্বোচ্চ ৮০% অভিজ্ঞতার সনদপত্র চাইবার বিধান থাকলেও ডিএফও নির্মল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ৬,৬০,০০,০০০/- (ছয় কোটি ষাট লক্ষ) টাকার অফিস ভবন নির্মাণ কাজের জন্য একক কার্যাদেশে ৬ কোটি টাকার পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদপত্র চান। কিন্তু পিপিআর অনুসারে কাজের জন্য সর্বোচ্চ ৫,২৮,০০,০০০/- (পাঁচ কোটি আঠাশ লক্ষ) টাকার পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদপত্র চাওয়া যায়। নিজস্ব পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দেওয়ার জন্য মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সুফল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সকল ডিভিশনের যে কোন কোটেশন/দরপত্র/ মূল্যানুমান প্রকল্প পরিচালক অনুমোদন দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুর্নীতির গোমড় ফাঁস হবার ভয়ে প্রকল্প পরিচালককে কোন তথ্য না দিয়ে এবং দরপত্রটি অনুমোদনের জন্য প্রকল্প পরিচালকের কাছে না পাঠিয়ে অত্যন্ত গোপনীয় কায়দায় পিপিআর বহির্ভূতভাবে দুর্নীতিবাজ ফেসিস্ট সরকারের দোষরদের প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু ডিএফও কর্তৃক যেকোন কাজের কার্যাদেশের অনুলিপি প্রকল্প পরিচালকের বরাবরে প্রেরণ করার বিধান থাকলেও নির্মল কুমার পাল প্রকল্প পরিচালককে কোন কার্যাদেশের অনুলিপি প্রেরণ করেন নাই।
অন্য একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডিএফও নির্মল কর্তৃক পিপিআর বহির্ভূত শর্ত আরোপ, গোপন রেট জানিয়ে দেওয়া, আর্থিক লেনদেন ও বিধি বহির্ভূতভাবে অনুমোদন নেয়ার বিষয়ে ডিএফও নির্মলকে সহযোগিতা করেন বণ্যপ্রাণী কর্মকর্তা তন্ময় বাবু ও লুৎফর পারভেজ নামক সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা।
দরপত্রে অংশগ্রহনকারী ঠিকাদাররা জানান, বর্তমান সংস্কারের যুগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পালের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত। তার ভয়ে মুখ খুলতে রাজি না। এ বিষয়ে বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পালের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।