কলকাতা প্রতিনিধিঃ সমরেশ রায় ও শম্পা দাস
আজ ২রা অক্টোবর বুধবার, ঠিক দুপুর ১২ টায়, নিউ আলিপুর সুরুচি সংঘের ভাবনা ও থিমের শুভ সূচনা করলেন, এমন একটি নামকরণের মধ্য দিয়ে ভাবনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন, যা মানুষের মন কারবে, এবং ভাবনার সাথে সাথে যে থিম সং তৈরি করেছেন, সত্যিই মানুষের মনকে আন্দোলিত করবে আশা রাখেন।
গীতিকার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরকার জিৎ গাঙ্গুলী, শিল্পী বিখ্যাত গায়িকা মহালক্ষ্মী, যাহাদের প্রচেষ্টায় সৃষ্টি হয়েছে এই থিম সং।
শুভ সূচনায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন , মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সুরুচি সংঘ ক্লাবে সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাস, পৌর মাতা জুঁই বিশ্বাস, কিংশুক মৈত্র, ডক্টর ধ্রুবজ্যোতি ভৌমিক, হরদেব, ভাবনা পরিকল্পনা প্রতিমায় রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী শ্রী গৌরাঙ্গ কুইলা, আলোক শিল্পী স্বনামধন্য দীনেশ পোদ্দার, আলোক শয্যায় কার্তিক ইলেকট্রিক ও সাউন্ড, মন্ডপ শয্যায় গোল্ডেন মেমোরি পূর্ব মেদিনীপুর।
একটি সুন্দর ভাবনার মধ্য দিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন, যেগুলি একসময় মূল্যবান ছিল, কিন্তু আজ সেগুলি মূল্যহীন, যা সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে আজ প্রবীণ ও অপ্রয়োজনীয়, আর সেই সকল বস্তু দিয়েই সুরুচি সংঘের থিমের মাধ্যমে নতুন প্রাণের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে, যেগুলিকে সঞ্চয় করে এই থিমের মধ্য দিয়ে রূপদান দিয়েছেন। তবে ৭১ তম বর্ষেও সুরুচি সংঘ মানুষের মন জয় করবে বলা যেতে পারে।
এবারের থিমের মধ্য দিয়ে তাহারা ব্যবহার করেছেন, তেলের ড্রাম, রং এর ড্রাম, ডাবু হাতা, গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, মাছ ধরার জাল, রেকর্ড প্লেয়ার, প্রভৃতি। যেগুলি এক সময় ব্যবহার করার পর আমরা কোথাও জমিয়ে রাখি বা বিক্রি করে দিই, সেই সকল জিনিস দিয়েই এবারের ভাবনা। এবং পুরানো দিনগুলিকে মনে করিয়ে দেওয়া। কোন জিনিসই ফেলনা নয়।
এছাড়াও মূল প্রবেশপথ থেকে মণ্ডপ প্রাঙ্গনে প্রবেশ করলে দেখা যাবে আধুনিক সভ্যতার প্রতিচ্ছবি, আর বাহির পথে দৃশ্যমান হবে আজকের সমাজের এক অভিশাপ বৃদ্ধাশ্রম এর প্রতি আমাদের নীরব প্রতিবাদ। সাথে সাথে বেজে উঠবে মুহূর্তে মুহূর্তে এই সুন্দর থিম সংটি।
এর সাথে সাথে সাবেকি আমায় মাতৃ মন্দিরটি, বনেদি বাড়ির কথা ও পুজো মনে করিয়ে দেবে, সাথে সাথে থাকবে আলোকসজ্জার এক অভিনবত্ব। ভেসে আসবে পুরানো মাটির গন্ধ, বিভিন্ন ধরনের মাটি এঁটেল মাটি ,দোঁয়াশ মাটি ,বেলে মাটি, গিরি মাটি ,খড়ি মাটি ,এলা মাটি প্রকৃতির ব্যবহারে তাদের বিচিত্র বর্ণছটায় হয়ে উঠবে মাতৃ মূর্তির অপরূপ শোভা।
মাননীয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মহাশয় সংক্ষিপ্ত কথার মধ্য দিয়ে বলেন, সুরুচি সংঘ প্রথম থেকেই সৃষ্টিকর্তা, ভাবনা ও থিমের, প্রথম থিমের পুজো করেন সুরুচি সংঘ, এবং দুর্গা পূজার ইতিহাসে সুরুচি সংঘ প্রথম সুরক্ষা বীমা চালু করে, শুধু তাই নয় সমগ্র মন্ডপ, পুজোয় কর্মরত সহযোগীবৃন্দ ও আগত সমস্ত দর্শনার্থীদের জন্য সুরক্ষা বীমার ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ মোট 1 কোটি 50 লক্ষ টাকা।
এছাড়াও বলেন আজ যত জায়গায় থিম পুজো শুরু হয়েছে ,সেগুলি সৃষ্টিকর্তা প্রথম সুরুচি সংঘ, সুরুচি সংঘের দেখাদেখি সকলের থিম পুজোয় নেমেছেন ,মানুষের কাছে ও দর্শকদের কাছে তারাই থিম তুলে ধরেছিলেন। তারা সেই থিম বহন করে নিয়ে চলেছেন,এই পূজো একসময় বাবা কাকারা চালাতেন ,সেই পুজো আজ আমরা করার পর, ছোট ছোট ছেলেরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে, আমরা তাদের পাশে থেকেই যাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি এটুকুই কামনা করি। আমরা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কুর্নিশ জানাই। সুন্দরভাবে পুজোকে ধরে রাখার জন্য, যা এশিয়ান পেইন্টস সম্মানে ভূষিত হওয়ার জন্য।
আজ শুভ মহালয়ার পূর্ণ লগ্নে, সকল আগত দর্শনার্থী, এলাকার পল্লীবাসী, এবং ক্লাবের সকল সদস্যদের আমার তরফ থেকে শুভ শারদীয়ার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানালাম।
সবাই আসুন মন্ডপ দর্শন করুন প্রতিমা দর্শন করুন এবং আপনাদের বিচারী আমাদেরকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সম্মান ছিনিয়ে নিতে সাহায্য করবে।