নিজস্ব প্রতিবেদক
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে ক্ষমতার পালাবদলের মাসখানেক দৌরাত্ম ছিল না কিশোর গ্যাংয়ের। আওয়ামী ক্ষমতাসীনদের প্রত্যক্ষ মদদে ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা কিশোর গ্যাংগুলো ভোল পাল্টে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে খুলনায়। খালিশপুর পৌরসভা মোড়ে কিশোর গ্যাংস্টার সাহাদ বাহিনীর (দা বাহিনী) অতর্কিত হামলায় উদীয়মান যুব সমাজের তিন সদস্য মারাত্মক আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে আনুমানিক পৌনে ২টায় খালিশপুর পৌরসভার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বেশকিছু দিন ধরে খালিশপুর আলমনগর রেল লাইনের বাসিন্দা মুন্সি গোলাম নবীর ছেলে মুন্সি সাহাদ নবী কিশোর গ্যাং বানিয়ে নিজেকে গ্যাং স্টার পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন সময় নাশকতা চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন ধরে কিশোর গ্যাং সাহাদ বাহিনীর বখাটে ছেলেরা খালিশপুর আলমনগর জোড়াতাল গাছ মোড়ে মারামারিসহ নাশকতা চালাচ্ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে সাহাদসহ তার বাহিনীর ছেলেদের স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন উদীয়মান যুব সমাজের পক্ষ থেকে এ ধরনের নাশকতা বন্ধের অনুরোধ করা হয়। তারই জেরে শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে উদীয়মান যুব সমাজের তিন সদস্য সাফিন, রকি ও শুভ’র উপর অতর্কিত হামলা চালায় সাহাদসহ তার বাহিনীর ৩০/৪০ জন চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানায় সংগঠনের সদস্যদের নিরাপত্তায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ করেন সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক মোঃ রবিউল গাজী উজ্জল।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় মাস খানেক গা ঢাকা দিয়েছিল গ্যাং লিডার সাহাদ নবী। তার পরিবারের লোকজন এখনো আত্মগোপনে। তিন/চারদিন প্রকাশ্যে ফিরেই চরম বেপরোয়া আচরণ করছে সাহাদ নবী তার পোষ্য সন্ত্রাসীরা। তাদের ইভটিজিং থেকে রক্ষা পায় না স্কুল-কলেজের ছাত্রী থেকে শুরু করে মাঝ বয়সী মা বোনেরাও। দিনে ব্যস্ততম সড়কের উপর দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে ধূমপান করে ধোঁয়া ছাড়ে মানুষের মুখের উপর। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রতিবাদীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে ওইসব সন্ত্রাসীরা। তাদের হাতে লাঞ্ছিত হবার মান-সম্মানের ভয়ে ও অতর্কিত হামলার আশঙ্কায় এলাকার কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। যৌথ বাহিনী যদি এইসব কিশোর গ্যাং স্টারদের নির্মূল করতে না পারে তাহলে দেশবাসী কিভাবে দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্বাদ পাবে- এমনি প্রশ্ন এলাকাবাসীর।