দেশের তথ্য ডেস্কঃ
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ফ্লাইওভারের গার্ডারধসে ১৩ জনের প্রাণহানির মামলায় ৮ আসামিকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দায়িত্ব পালনে গাফিলতির মাধ্যমে অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আট কর্মকর্তাকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত এই রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনজুরুল ইসলাম, প্রকল্প প্রকৌশলী আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান, আব্দুল হাই, মো. মোশাররফ হোসেন রিয়াজ, মান নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশলী শাহজান আলী ও রফিকুল ইসলাম।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানিয়েছেন, দণ্ডবিধির ৩৩৪(এ) ধারায় আট আসামির প্রত্যেককে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন লাখ টাকা করে জরিমানা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। জরিমানার টাকা আদায় করে ফ্লাইওভার ধসে হতাহতের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া একই রায়ে আদালত দণ্ড বিধির ৩৩৮ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে আরও দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। উভয় সাজা একটির পর আরেকটি কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের ৩টি গার্ডার ভেঙে ১৩ জন নিহত হয়। কর্তব্যে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে বহদ্দারহাটে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙে প্রাণহানির ঘটনায় প্রকল্প পরিচালক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর চান্দগাঁও থানার তৎকালীন উপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৮ জুন তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এসএম মজিবুর রহমানের আদালত ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২২ জন। আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন ৭ জন।