অপুষ্টিতে গাজায় মারা গেল ৬ বছরের হিকমত

1720445790-bb9e7c9d610ad12d035acef7be92e80e.jpg

দেশের তথ্য ডেস্কঃ

হিকমত রাদ বদির নামের ছয় বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি ছেলে সোমবার গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে মারা গেছে। ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গুরুতর অপুষ্টিতে সোমবার তার মৃত্যু হয়। শিশুটির চাচার বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

হিকমতের চাচা আহমেদ বদির জানান, তার পরিবারকে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি আনাদোলুকে বলেন, ‘আমরা হিকমতের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও পুষ্টি পাওয়ার আশায় সেখানে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত এখানেও শিশুদের জন্য উপযুক্ত খাবার বা চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাই তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু শিশুরাই যে অপুষ্টিতে ভুগছে তা নয়, প্রাপ্তবয়স্করাও ইসরায়েলি যুদ্ধের কারণে কঠোর জীবনযাপনের মধ্যে রয়েছে।

এর আগে গত মাসে উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়া মারাত্মক অপুষ্টির কারণে চার শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে আবু সাফিয়া জানান, হাসপাতালটি মাত্র দুই সপ্তাহ সময়ে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির ২৫০ টিরও বেশি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে।

এই চিকিৎসক সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘গাজা সত্যিকারের স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে, যা শিশুদের দিয়ে শুরু হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্কদেরও প্রভাবিত করতে পারে।’

গণমাধ্যমটি বলছে, গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ, ইসরায়েলের নিরলস আক্রমণের কারণে অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণের জবাবে গাজায় ক্রমাগত নৃশংস আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। দেশটির আন্তর্জাতিক নিন্দার সম্মুখীন হয়েছে। সেই সঙ্গে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবও লঙ্ঘন করেছে। গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ।

এ ছাড়াও ৯ মাসের যুদ্ধে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের পাশাপাশি অবরোধের মধ্যে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল অভিযুক্ত। এর সর্বশেষ রায়ে অবিলম্বে গাজার দক্ষিণের শহর রাফাতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শহরটিতে ৬ মে আক্রমণের আগে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি যুদ্ধ থেকে আশ্রয় নিয়েছিল।

Share this post

PinIt
scroll to top