দেশের তথ্য ডেস্কঃ
চার কক্ষবিশিষ্ট বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সমাজসেবা ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। ছাদের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ভিজে যাচ্ছে ফাইলপত্র। প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে নির্মিত এই ভবন বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এই ভবনে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে সেবা প্রার্থীদের দোয়া পড়তে পড়তে ঢুকতে হয় সরকারি এই কার্যালয়ে। যে কোনো কাজে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে ভয়ে বুকটা দুরুদুরু করে অনেকের। ভবনের দেয়ালের অংশ বিশেষ খসে পড়ছে।
ফলে সেবার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে অফিসের কার্যক্রম।
ভবনের পেছনে একটি খাল রয়েছে। যার ফলে জোয়ারের পানি বেড়ে গেলেই ভেতরে পানি ঢুকে মেঝে থইথই করে।
এদিকে ছাদ চুঁইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে চেয়ার-টেবিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। এ ভবনে সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ব্যাপারে কিছু করার উপায় নেই। ভবন ভেঙে পড়ার ভয় ও আতঙ্ক মাথায় নিয়েই সেবা দিচ্ছেন তারা। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন সবাই।
কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা চর এককরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সেবা নেওয়ার জন্য এসেছি।
কার্যালয়ের বেহাল অবস্থা দেখে ভেতরে ঢোকার সাহস পাচ্ছি না। কিন্তু কি আর করার, ভেতরে যেতেই হবে। যাওয়ার আগে দোয়া পড়ে যাচ্ছি, যাতে করে বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারি।’
ইউপি সদস্য নাছির হোসেন বলেন, ‘ভবনটি এতটা ঝুঁকিপূর্ণ, যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। আমরা নতুন ভবনের দাবি জানাই।’
সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী আরিফুজ্জামান বলেন, ‘ভবনের ভেতরে ঢোকার আগে দোয়া পড়ি। ভবনের ভেতরে কাজ করার সময় ভয়ে বুকটা দুরুদুরু করে। ভবনে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। ভেতরটাও সবসময় স্যাঁতসেঁতে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের দাপ্তরিক কাজ করতে হচ্ছে। কাজের সময় ভয়ে কখনো ছাদের দিকেও তাকাই। প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার শতাধিক সেবাপ্রত্যাশী আসা-যাওয়া করেন। আতংকিত হয়ে তাড়াহুড়ো করে তারা কাজ শেষ করেন।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ভবন ভেঙে পড়ার ভয় ও আতংক থাকলেও কিছু করার নেই। মানুষকে সেবা দিতেই হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একাধিকবার এ ভবন পরিদর্শন করলেও এখনো কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা হয়নি। প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো ভবনটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা।
তিনি আরো বলেন, ভবনের একাংশে বড় বড় ফাটল ধরেছে, দেবে গেছে, খালের দিকে হেলে পড়েছে, বার বার মনে হয় এই বুঝি মাথার ওপর ভেঙে পড়ল ছাদ। এই জরাজীর্ণ ভবনে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রায়ই আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে ডেকে এনে কথা বলেন উপকার ভোগীরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়টি উপজেলা মাসিক মিটিংয়েও আলোচনা হয়েছে। এমনকি রেজুলেশন করা হয়েছে।